যুক্তরাষ্ট্রে ফার্মেসিতে গর্ভপাতের বড়ি বিক্রির অনুমতি
<![CDATA[
যুক্তরাষ্ট্রে ফার্মেসিগুলোতে গর্ভপাতের বড়ি বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন এফডিএ এই অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে প্রথমবারের মতো গর্ভপাতের ওষুধ বিক্রি করতে পারবে ফার্মেসিগুলো।
গত বছরের জুন মাসে ‘রো অ্যান্ড ওয়েড’ মামলায় ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে ৫০ বছরের পুরোনো গর্ভপাতের সাংবিধানিক সুরক্ষাবিষয়ক আইন বাতিল করে দেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটোর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘১৯৭৩ সালের মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকার দেয়াটা ছিল বড় ভুল।’
ওই রায়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের আরও অর্ধেক রাজ্য গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে। শুধু তাই নয়, গর্ভপাত নিরোধক ওষুধ বা বড়িও নিষিদ্ধ করতে চাইছে।
গর্ভপাতের আইনি অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশটিতে আন্দোলন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গর্ভপাতের বড়ি নিয়ে এফডিএ’র নির্দেশনা এলো।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) এফডিএ’র ওয়েবসাইটে এক নির্দেশনায় বলা হয়, মিফেপ্রিস্টোন আরইএমএস কর্মসূচী অধীনে মিফেপ্রেক্স ও এর অনুমোদিত জেনেরিকের বড়িগুলো ফার্মেসি ও বা সরকার অনুমোদিত ওষুধ বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রয় ও বিতরণ করতে পারবে।’
আরও পড়ুন: অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাত বিষয়ে যে রায় দিলেন ভারতের আদালত
নারীদের গর্ভপাতের আইনি অধিকার বাতিলে আদালতের সিদ্ধান্তের পর গর্ভপাতের ওষুধের সহজলভ্যতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার প্রশাসন।
সর্বোচ্চ আদালতের ওই সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা পরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন নারীদের কাছে গর্ভপাতের ওষুধ সহজলভ্য রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আদেশ দেন।
টিভিতে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘আদালতের আজকের সিদ্ধান্তে যেসব নারীর ওপর প্রভাব পড়বে, তাদের অধিকার রক্ষায় আমি আমার ক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করব।’
যুক্তরাষ্ট্রে অর্ধেকের বেশি গর্ভপাত করা হয় ওষুধ বা বড়ি ব্যবহারের মাধ্যমে। গর্ভধারণের ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই এই ওষুধ খেয়ে গর্ভপাত ঘটাতে পারেন নারীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ১১ রাজ্যে গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণ বা পুরোপুরি বাতিলে জোরালো দাবি রয়েছে। এসব রাজ্যের মধ্যে বেশির ভাগই রিপাবলিকানদের নেতৃত্বাধীন। অন্য রাজ্যগুলোও তাদের অনুসরণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে গর্ভপাত বড়ি ও এইচআইভি ওষুধ
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন দুই দশক আগে গর্ভপাতের ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। গত বছর টেলিমেডিসিন ও মেইলের মাধ্যমে এ ধরনের ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে রাখা যাবে বলেও অনুমতি দেয়া হয়।
তবে গর্ভপাতবিরোধী রাজ্যগুলোয় এ ধরনের ওষুধের ব্যবহার নিয়ে আইনি ধোঁয়াশা তৈরি হতে পারে। ভবিষ্যতে প্রজনন অধিকার নিয়ে আদালতে এ ইস্যুতেও আইনি লড়াই হতে পারে।
গর্ভপাতের অধিকারকে সমর্থনকারী গবেষণা সংস্থা গাটমাচের ইনস্টিটিউট বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ রাজ্যে ক্লিনিকের মাধ্যমে গর্ভপাত ওষুধের অনুমোদন দেয়া প্রয়োজন।
আর গর্ভপাতের সব নিয়ম বাতিল করা হয়েছে—এমন রাজ্যগুলোয় বসবাসরত নারীদের বাইরের রাজ্যে থাকা চিকিৎসক, বিদেশি ক্লিনিকের সঙ্গে টেলিস্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে এ ধরনের ওষুধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যেতে পারে।
]]>