যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খলিল, গ্রেফতার এড়াতে ব্যবহার করতেন না ফোন
<![CDATA[
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নেত্রকোনার খলিলুর রহমানকে সাভার থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০১৫ সাল থেকে পলাতক খলিল গ্রেফতার এড়াতে ঘন ঘন বাসা বদল করতেন, ব্যবহার করতেন না মোবাইল ফোন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় হওয়ার পর ৬৮ বছর বয়সী খলিল সাভারে গিয়ে আশ্রয় নেন। র্যাব-১৪ ও সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১৫ সালের ১ এপ্রিল নেত্রকোনার এই যুদ্ধাপরাধ মামলার তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা। ২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি খলিলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে এক আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অপর চার আসামি নেত্রকোনার দুর্গাপূর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মো. খলিলুর রহমান, তার ভাই মো. আজিজুর রহমান, একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের আশক আলী এবং জানিরগাঁও ইউনিয়নের মো. শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাতক্ষীরায় বিএনপি নেতাসহ গ্রেফতার ৪
চার আসামির মধ্যে খলিলুর রহমান পলাতক ছিলেন। বিচার চলাকালে কারাগারে থাকা তিন আসামিও মারা যান। ফলে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে কেবল খলিলের রায় ঘোষণা হয়। পলাতক খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সময় নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ যুদ্ধাপরাধের পাঁচ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।রায়ে সবগুলো অভিযোগেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং একটি অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।
সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মঈন বলেন, ২০১৫ সাল থেকে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই খলিলপলাতক ছিল। ২০১৭ সালে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে গৃহীত হলে সে আত্মগোপনে চলে যায় এবং রাজধানীর দক্ষিণখান, তুরাগ ও উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, এ সময় যোগাযোগের জন্য সে কোনো ধরনের মোবাইল ফোন ব্যবহার করত না। কিন্তু মাঝে মাঝে তার পরিবারের সদস্যরা গোপনে তার সঙ্গে দেখা করত। খলিলের ছেলে-মেয়েরা তার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য নিয়মিত টাকা দিত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নোয়াগাঁও এলাকার খলিলুর রহমান ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আল-বদর বাহিনীতে যোগ দেন। চণ্ডিগড় ইউনিয়নে আল-বদর বাহিনীর কমান্ডারও হন। স্বাধীনতার পর তিনি এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
]]>