বিনোদন

যুদ্ধ-অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করুন: জাতিসংঘে শেখ হাসিনা

<![CDATA[

গত আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারির প্রভাব বিশ্ব যখন সামলে উঠতে শুরু করেছে, তখনই বিশ্বকে নতুন করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, জ্বালানি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে সেই বাস্তবতাই বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যান্যবারের মতো এবারও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন তিনি।  

প্রধানমন্ত্রী এসময় বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে সহায়তা-প্রার্থী ঝূঁকিপূর্ণ দেশগুলো এখন আরও প্রতিকূলতার মুখে পড়েছে। বর্তমানে আমরা এমন একটি সংকটময় সময় অতিক্রম করছি, যখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পারস্পরিক সংহতি প্রদর্শন করা আবশ্যক। আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে, সংকটের মুহূর্তে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো জাতিসংঘ।  

সর্বস্তরের জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের জন্য জাতিসংঘকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সকলের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরীপন্থা কখনো কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না।  

পারস্পরিক আলাপ-আলোচনাই সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এই পরিপ্রেক্ষিতে ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ’ গঠন করায় জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমি ধন্যবাদ জানাই। এই গ্রুপের একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমি বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সংকটের গভীরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বৈশ্বিক সমাধান বের করতে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। 

আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তা হলো, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরীতা নয়’। বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকেই এই প্রতিপাদ্য-উদ্ভূত জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করে আসছে জানিয়ে ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর দেয়া প্রথম ভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য তা এই উপলব্ধি থেকে জন্মেছে যে, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা আমাদের কষ্টার্জিত জাতীয় স্বাধীনতার ফল আস্বাদন করতে পারব এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সকল সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হবো। সুতরাং আমরা স্বাগত জানাই সেই সকল প্রচেষ্টাকে, যার লক্ষ্য বিশ্বে উত্তেজনা হ্রাস করা, অস্ত্র প্রতিযোগিতা সীমিত করা, এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকাসহ পৃথিবীর প্রত্যেকটি স্থানে শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান নীতি জোরদার করা।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বক্তব্য এখনও সমভাবে প্রাসঙ্গিক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্বাস করতেন, শান্তি হলো বিশ্বের সব নারী-পুরুষের আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তব প্রতিরূপ। যুদ্ধের কারণে মানবজাতি, বিশেষ করে শিশু ও নারীরা চরম কষ্ট ভোগ করে। কত মানুষ শরণার্থী হয়ে পড়েন।’  

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!