যেভাবে দ্বিতীয়ার্ধে বদলে গিয়ে জয় পেল আর্জেন্টিনা
<![CDATA[
প্রথমার্ধে বাজে ফুটবল খেলা আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাড়িয়ে হারিয়ে দিয়েছে মেক্সিকোকে। ডু অর ডাই ম্যাচে ২-০ গোলের জয়ে শেষ ষোলোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো মেসি-মারিয়াদের। প্রথমার্ধে মেক্সিকোর গোলে একটিও শট না রাখা আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু ভালো আক্রমণ শানায়। যার প্রেক্ষিতে পায় কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা। মূলত অধিনায়ক মেসি ও বদলি খেলোয়াড়রাই পাল্টে দিয়েছে ম্যাচের গতিপথ।
লুসাইল স্টেডিয়ামে শনিবার (২৬ নভেম্বর) আর্জেন্টিনা লিওনেল মেসি ও এনজো ফার্নান্দেজের গোলে ভর করে ২-০ গোলে হারিয়েছে মেক্সিকোকে। প্রথমার্ধে হাই প্রেসিংয়ে আর্জেন্টিনাকে বিপর্যস্ত করে রাখা মেক্সিকো দ্বিতীয়ার্ধে ব্যর্থ হয়েছে লিওনেল মেসিকে আটকে রাখতে।
আর্জেন্টিনা এদিন ৫টি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে। তবে পরিবর্তনের পরও মধ্যমাঠ ব্যর্থ হয়েছে এ দিনও। মেক্সিকোর প্রেসিংয়ে ঠিকমত পাস পর্যন্ত দিতে পারছিল না ডি পল-গুইডো রদ্রিগেজরা। ফলে গোল লক্ষ্য করে শটই নিতে পারেনি মেসি-লাউতারো মার্টিনেজ।
আরও পড়ুন:মেসি ম্যাজিকে আশা টিকে থাকল আর্জেন্টিনার
দ্বিতীয়ার্ধে কৌশলে বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি। কৌশল পরিবর্তন করেন মেক্সিকোর কোচ জেরার্দো মার্টিনোও। যা তাদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে আত্মবিশ্বাসী ফুটবল
প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনাকে চিনতে হয়েছে জার্সি দেখে। নিষ্প্রাণ মেসিদের মধ্যে দেখা গেছে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি। মেক্সিকোর হাই প্রেসিংয়ের জবাব দেয়ার মতো সাহসী ফুটবল খেলতে ব্যর্থ হয় তারা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের হারানো আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরে পায় মেসি-ডি পলরা। মধ্যমাঠে গোছানো খেলা খেলে আক্রমণ শানাতে থাকে।
বদলি নামানোয় বিচক্ষণতা
লাউতারো মার্টিনেজ এদিন খাবি খাচ্ছিলেন মেক্সিকোর কৌশলের সামনে। তার ধীরগতি ও প্রেসিং ফুটবলে দুর্বলতার কারণে অ্যাটাকিং থার্ডে প্রভাব বিস্তার করতে পারছিল না আলবিসেলেস্তেরা। মেসির সঙ্গেও জমছিল না রসায়ন।
তবে বদলি হিসেবে নেমে দারুণ গতি দিয়ে মেক্সিকোকে ভড়কে দেন ইউলিয়ান আলভারেজ। মেসিকে দারুণভাবে সাহায্য করতে থাকেন আক্রমণে। ৪-৪-২ ফর্মেশনে ট্র্যাঞ্জিশন করা আর্জেন্টিনা ফাঁকা জায়গা পেতে থাকে মেক্সিকান রক্ষণভাগের পেছনে।
আরেক বদলি খেলোয়াড় এনজো ফার্নান্দেজ নামার পর প্রাণ ফিরে পায় আর্জেন্টিনার মধ্যমাঠ। মেক্সিকো প্রেসিং ছেড়ে রক্ষণে বেশি মনযোগী হলে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডি পলকে সঙ্গে নিয়ে মধ্যমাঠের দখল নিয়ে নেন তিনি। মেক্সিকো কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠার চেষ্টা করলেও মধ্যমাঠে দারুণভাবে তাদের নিষ্ক্রিয় করার কাজটাও দুজনে দারুণ করেছেন। আর দ্বিতীয় গোলটি করে তো দলের জয় নিশ্চিতের কাজটা করেছেন ২১ বছর বয়সী এনজোই।
আরও পড়ুন:মেসির গোলে এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা
লিওনেল মেসির জ্বলে ওঠা
লিও মেসির ওপর আর্জেন্টিনা কতটুকু নির্ভরশীল তার আরও একটা প্রদর্শনী দেখা গেল লুসাইলে। প্রথমার্ধে বলের দখল নিতে অনেক নিচে নেমে খেলতে হয়েছে মেসিকে। সেই সঙ্গে বল পায়ে খুব একটা সুবিধাও করতে পারছিলেন না আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মধ্যমাঠে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর আরও বেশি স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারছিলেন তিনি। যার প্রভাব পড়তে থাকে আর্জেন্টিনার খেলাতেও।
মেক্সিকোর রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকেন তিনি। দুপাশে কখনো আড়াআড়ি বল পাঠাচ্ছিলেন তো কখনো জমাট রক্ষণ ভেঙে চেষ্টা করেছেন ভেতরে ঢুকতে। অবশেষে ডি মারিয়ার পাস থেকে মেক্সিকোর ডিবক্সের বাইরে সামান্য একটু ফাঁকা জায়গা পেতেই গড়ানো শটে দলকে এনে দিয়েছেন গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে মেক্সিকান কোচের ভুল ট্যাকটিকস
প্রথমার্ধে মেক্সিকো তাদের হাই প্রেসিং ফুটবল দিয়ে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে ম্যাচ। ভাগ্য সহায় হলে পেতে পারতো গোলের দেখাও। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কী ভেবে তিনি বদলে ফেলেন ট্যাকটিকস। মেক্সিকান রক্ষণভাগের শক্তি বাড়াতে ‘বাসপার্ক’ কৌশল গ্রহণ করেন তিনি। এতে মাঝমাঠের লড়াইয়ে দখল হারায় তারা।
আলবিসেলেস্তেরা একের পর এক আক্রমণে ওঠার সুযোগ পেয়ে যায়। বল পায়ে আরও উপরে উঠে খেলতে থাকা মেসিকে থামাতে ব্যর্থ হয়ে প্রথম গোলটি খায় তারা। কাউন্টার অ্যাটকের চেষ্টা চালালেও বল নিয়ে মধ্যমাঠ পার হতে পারেনি লোজানো-রাউল হিমিনেজরা।
]]>




