রংপুরে অধ্যক্ষের অবহেলায় ফরম পূরণে ব্যর্থ, মাদ্রাসায় তালা
<![CDATA[
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় ফরম পূরণ করতে না পারা শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিচার ও ফরম পূরণের দাবিতে প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদ্রাসার প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে না পারা ৩ শিক্ষার্থী হলেন, শিমুল, শাকিল মিয়া, ও শফিউল ইসলাম।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা নিয়মিত ক্লাস করেছি। স্যার যখন যা বলেছেন শুনেছি। আমরা মাদ্রাসার সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছি। ফরম পূরণ করতে গিয়ে জানতে পারি আমরা এবার পরীক্ষা দিতে পারবো না। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমাদের কি অপরাধ? আমরা কেন পরীক্ষা দিতে পারবো না? পরে অভিভাবকরা জানতে পেরে স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন কিন্তু স্যারকে পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: নীলফামারীর সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য: তদন্ত শুরু
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাকিল মিয়ার মা শাহেদা বেগম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। আমাদের অপরাধ কি? মাস্টারের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু তিনি আমার ও আমার ছেলের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন। আমি যে কোনো মূল্যে আমার ছেলে ও তার বন্ধুরা যেন এবারই পরীক্ষা দিতে পারে সেই দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে অধ্যক্ষের এমন উদাসীন কর্মকাণ্ড নতুন নয় বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক।
তারা বলেন, অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের যে কোনো কাজ একাই করেন। প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে কেউ কিছু বলতে গেলে উল্টো তাকেই নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। সবকিছুর যেমন একটা নিয়ম আছে, তেমনি সমস্যার সমাধানও আছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হওয়া উচিত: নিক্সন চৌধুরী
জানা গেছে, বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসাটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। নিয়মিত ক্লাস না হওয়া ছাড়াও রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্য ও অধ্যক্ষের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগ। গত বছর প্রতিষ্ঠানটিতে ৩টি পদে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দ লুটপাটের অভিযোগ। সবশেষ তিন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণে অধ্যক্ষের চরম উদাসীনতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগের বিষয়ে বালারহাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৮ জানুয়ারি জরিমানাসহ ফরম পূরণের শেষ দিন ছিল। এবার ২০জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ জন ফরম পূরণ করেছে, বাকি ৫ জন এখনো যোগাযোগ করেনি।’
তিন জন ছাত্রের ফরম পূরণ না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনাকালে অনেক ছাত্রছাত্রী অনিয়মিত ছিল। ওইসময় তাদেরকে পাওয়া যায়নি, এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যসের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরেও তারা সাড়া দেননি। এজন্য তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় গিয়ে আবেদনও করে আসছি। ফরম পূরণ করতে না পারা ছাত্ররা এবার নয় আগামী ২০২৪ সালে পরীক্ষা দিতে পারবে।’
আরও পড়ুন: চবিতে নিয়োগ বাণিজ্য: অভিযুক্ত মানিক চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে মামলা
নিয়োগ বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে বিধিমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
]]>




