রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ ৮৬ কেন্দ্র
<![CDATA[
রাত পোহালেই রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ২২৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে কমিশন। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ২২৯টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৪৯টি কক্ষে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ করা হবে। ইভিএমের এ নির্বাচন কার্যক্রম সিসিটিভি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক সম্মেলনে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বক্তব্যে নির্বাচনী এলাকার ৮৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা।
পরে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেনও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তিনি কেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ নয় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, চিহ্নিত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, কোনো ধরনের সমস্যা যাতে সৃষ্টি না হয় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। এবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। এ ছাড়া প্রতিটি কেন্দ্র থাকবে সিসিটিভির আওতায়। ভোটগ্রহণের শুরু থেকে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রসিক নির্বাচন: সাংবাদিকদের জন্য ইসির ১৩ নির্দেশনা
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর ওয়ার্ডভিত্তিক অবস্থান জানা না গেলেও থানাভিত্তিক অবস্থান জানা গেছে। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৩৭টি, তাজহাট থানায় ৮টি, মাহিগঞ্জ থানায় ৯টি, হারাগাছ থানায় ৯টি, পরশুরাম থানায় ১৩টি ও হাজিরহাট থানায় ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে।
সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রেগুলোতে অন্যান্য কেন্দ্রের থেকে চারজন বেশি অস্ত্রসহ পুলিশ (একজন এসআই/এএসআই ও ৩ জন কনস্টেবল), দুইজন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার ও ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য (৪ জন মহিলা ও ৬ জন পুরুষ) মোতায়েন থাকবে।
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সম্পর্কে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে সব কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ, তারপরও কিছু কেন্দ্র আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়। সেই চিহ্নিত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলো নিয়ে কয়েক দিন থেকে কাজ করা হচ্ছে, আলাদাভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা তৎপর। আশা করছি সুষ্ঠুভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারব। তবে কেন্দ্র নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই প্রার্থীদের। সকল প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে সুনিশ্চিত দাবি করে নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এটাই প্রত্যাশা তাদের।
আরও পড়ুন: রসিক নির্বাচন: ২৫-২৯ ডিসেম্বর আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধ
নির্বাচনে মেয়র পদে হেভিওয়েট প্রার্থী সদ্য বিদায়ী মেয়র জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ভোট নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, গত নির্বাচনে জনগণ প্রায় এক লাখ ভোট আমাকে বেশি দিয়েছিল। আমি মনে করি, এবারের ভোটটা একতরফা হবে। ভোটের হিসাব বদলে যাবে। আমার বিশ্বাস গতবারের থেকে এবার অনেক বেশি ভোট দিবে জনগণ।
জয়ের ব্যাপারে একই কথা জানালেন আরেক শক্তিশালী প্রার্থী আওয়ামী লীগ প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াও। তিনি বলেন, প্রচার প্রচারণায় যেখানেই গিয়েছি সেখানে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক করেছেন, অনেক দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা রংপুরবাসী প্রধানমন্ত্রীকে কিছু দিতে পারিনি। আমার বিশ্বাস রংপুরবাসী এবার নৌকায় ভোট দেবে। কারণ, এই নগরীতে পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন হয়নি। সাবেক মেয়র সেটা করতে পারেননি।
নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন, সংরক্ষিত ১১টি ওয়ার্ডে ৬৮ এবং ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৮৩ জন কাউন্সিলরসহ মোট ২৬০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
]]>




