বিনোদন

রওশন-রাঙ্গার প্রার্থী প্রস্তুত, সময় নিচ্ছে আ.লীগ

<![CDATA[

তফসিল ঘোষণার পর অনেকটা সুনসান হয়ে পড়া রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের মাঠ খুব শিগগিরই সরগরম হয়ে ওঠার আভাস মিলেছে। ভোটের আগে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়া জাতীয় পার্টির দুটি অংশের ‘মুখোমুখি’ অবস্থান গ্রহণের মধ্য দিয়ে এবারের এ নির্বাচন মাঠে গড়াচ্ছে।

 দুএক দিনের মধ্যে রওশন-রাঙ্গা অংশের সমর্থন নিয়ে তরণ ও সাবেক এক ছাত্রনেতাকে মাঠে দেখা যাবে। তবে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এরশাদের লাঙল হাতে দিয়ে তাকে মেয়র হিসেবে বের করে আনতে চাইছে জাতীয় পার্টির রওশন-রাঙ্গার অংশটি।

তবে সরকারি শিবিরের নীরবতা এখনই ভাঙছে না। এবার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিজেদের গড়া সিটি করপোরেশন জয় করতে চায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে এ নির্বাচন দলটির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মাঠে গড়ানোর আগে ‘ড্রইংরূমে’ জমে উঠেছে রসিক নির্বাচন। যদিও অনেক আগে থেকে বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের, কিন্তু এই নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের মধ্যকার দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে সাজানো-গোছানো মাঠ লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।

রওশন এরশাদের সমর্থন নিয়ে পাল্টাপ্রার্থী হিসেবে রংপুর পৌরসভার সবশেষ মেয়র ও প্রবাসী নেতা আব্দুর রউফ মানিক নির্বাচনের মাঠে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিসেব মেলাতে না পেরে তিনি পিছুটান দিয়ে আমেরিকা ফিরে গেছেন। যাওয়ার সময় ভোটের আগে ফিরে আসবেন বলে জানিয়ে গেলেও এখন আর ফিরছেন না।

সময় সংবাদকে বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন আব্দুর রউফ মানিক। মঙ্গলবার রাতে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা ভোট করতে দিচ্ছে না।

আরও পড়ুন: রসিক নির্বাচনে ইসির ৬ নির্দেশনা

মানিকের পিছুটানের ফলে রওশন এরশাদ-মসিউর রহমান রাঙ্গা সমর্থিত অংশকে কিছুটা চুপচাপ দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত মানিকের বিকল্প খুঁজে পেয়েছেন তারা। শিগগিরই স্থানীয় রাজনীতি ও সামাজিক-সাংষ্কৃতিক কার্যক্রমে সক্রিয় এক সাবেক ছাত্রনেতাকে লাঙল নিয়ে ভোটের মাঠে নামতে দেখা যাবে। মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় অবস্থানরত তরুণ এই নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এখনই তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন। তবে তাকে বরণে রংপুরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় পার্টির বর্তমান ও সাবেক বেশ কয়েকজন নেতা বলছেন, আদালতের নির্দেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে কোনো কাজ করতে পারছেন না জিএম কাদের। আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় দলীয় মনোনয়নও তিনি দিতে পারবেন না। ফলে মেয়র মোস্তাফিজার রহমানকে তিনি সমর্থন দিয়ে রাখলেও মনোনয়ন দিতে পারছেন না। জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যে কোনো নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার কেবল দলের চেয়ারম্যানের।

গত সোমবার দলীয় মনোনয়ন প্রদানের একটি চিঠি মোস্তফিজার রহমানের প্রতিনিধি দলের  কাছে হস্তান্তর করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তবে তার সাক্ষর করা ওই চিঠি নির্বাচন কমিশনে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না বলে দাবি করেছেন খোদ দলটির অনেক নেতা।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট সালাহউদ্দিন কাদেরী বলেন, লাঙল প্রতীক বরাদ্দের এখতিয়ার বেগম রওশন এরশাদের। এটা আদালত ও ইসিতে প্রতিষ্ঠিত একটি বিষয়।

আরও পড়ুন: রসিক নির্বাচনে জাপার মনোনয়ন পেলেন মোস্তফিজার

সময় সংবাদকে দেয়া সাক্ষাতকারে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান এসব বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। রওশন এরশাদ আহুত দলের কাউন্সিল স্থগিত হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টির ভাঙন রোধ হলো কি না জানতে চাইলে তিনি না সূচক শব্দ ব্যবহার করেন।

তিনি বলেন, সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে, বাতিল করা হয়নি। তাই যে কোনো সময়, যে কোনো কিছু ঘটনার শঙ্কা আছে বলে মন্তব্য করেন মেয়র। তবে নিজের জনপ্রিয়তার কারণে প্রতীক হিসেবে লাঙল না পেলেও জয়ের ক্ষেত্রে তা প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে প্রতীক হিসেবে তিনি কলাগাছ নিয়ে দাঁড়ানোর বক্তব্য দিয়েছেন। যদিও এই বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন মোস্তাফিজার রহমান।

এ দিকে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিরোধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এবার সিটি নির্বাচনের ফসল ঘরে তুলতে সম্ভব সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। মূলত ৫ বছরের দুর্নীতি, অযোগ্যতা, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না হওয়াকে ইস্যু করে নির্বাচনের ছক কষছে দলটি।

বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য কাউকে প্রার্থী করে সর্বশক্তি নিয়োগ করে রংপুর সিটি করপোরেশন ছিনিয়ে নিতে চায় আওয়ামী লীগ। প্রার্থী নির্বাচন, নির্বাচনী ইস্তেহারসহ সবকিছুতেই এবার চমক থাকবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি। এখনই প্রার্থী ঘোষণা দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। এখনও কাউকে কোনো গ্রিনসিগন্যালও দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ওই সূত্র।

তবে দুজনকে মাঠে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর বাইরেও কাউকে প্রার্থী করা হতে পারে। কোনোভাবে বিতর্কিত নন, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় এমন কাউকে প্রার্থী করা হতে পারে।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!