রাজাপুরে খাদ্যে চেতনানাশক ৯ জন হাসপাতালে, স্বর্নালংকার ও নগদ টাকা লুট
মো: মিজানুর রহমান (পলাশ)
ফেনীর দাগনভূঞায় ঘরের মধ্যে রান্না করা খাদ্যে চেতনা নাশক জাতীয় কিছু মিশিয়ে দিয়ে দুই পরিবারের সবাইকে অচেতন করে স্বর্নালংকার ও নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিষপত্র লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাতে ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার বাড়ীতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে দুই পরিবারের নারী-শিশুসহ ৯ জনকে প্রতিবেশীরা অচেতন অবস্থায় ঘর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ্যরা হলেন- আবদুস ছাত্তার (৭২), জ্যোসনা আক্তার (৬২), হারুনুর রশিদ (৩৫), সুমাইয়া বেগম (৩২), আবুল হোসেন (৬৫), আফিয়া আক্তার (৫২), মো. সোহাগ (৩৫), ইব্রাহিম (৫) ও হুজাইফা (৭)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাতে দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মিয়ার বাড়ীতে আবদুস ছাত্তার ও তার ভাই আবুল হোসেনের ঘরের সবাই রাতের খাবার পেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আজ মঙ্গলবার সকালে ওই দুই পরিবারের দুটি ঘরের দরজাগুলি খোলা থাকলেও কেউ ঘুম থেকে উঠে বাইরে বের হয়নি এবং ওই দুই পরিবারের কোন লোকজনের কথাবার্তার শব্দও শুনতে পায়নি বাড়ীর অন্যান্য পরিবারের লোকজন। বেলা বাড়ার পর প্রতিবেশীরা ওই দুই পরিবারের ঘরের সামনে গিয়ে তাদেরকে ডাকাডাকি করতে থাকে। এতেও ঘরের ভেতর থেকে কারো কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা ঘরে ডুকে সবাইকে অচেতন ও ঘরের আলমারির দরজা খোলা, অন্যান্য জিনিয়পত্র এলামেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তখনই তাদের সন্দেহ হয় এবং অচেতন সবাইকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. ইকবাল হোসেন ভূঁঞা জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে অচেতন অবস্থায় দুই পরিবারের নারী শিশুসহ ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদেরকে রাতের খাবারের সাথে উচ্চ মাত্রার ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছিল বলে তাদের ধারনা। চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে ভর্তি ৯ জনের মধ্যে একজন ছাড়া অন্য ৮ জনের অবস্থা উন্নতির দিকে রয়েছে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, এটি দুর্বৃত্তদের কাজ। সোমবার সন্ধ্যার পর কোন অজ্ঞাত ব্যাক্তি পরিবারের সদস্যদের অলক্ষ্যে ঘরে ঢুকে রান্না করা খাবারের মধ্যে চেতনা নাশক জাতীয় কিছু মিশিয়ে দেয়। ওই খাবার পেয়ে সবাই অচেতন হয়ে যায়। এরপর ঘরের জিনিষপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে। তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নেওয়ার চেষ্টা চলছে।