খেলা

রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা, বিপর্যস্ত ইউরোপ

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে পশ্চিমারা। কিন্তু রাশিয়াকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করা অসম্ভব। নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউরোপই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় শহর ভ্লাদিভোস্তকে চলমান ‘ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে’-এর সম্মেলনে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন রুশ নেতা।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভ্লাদিভোস্তকে শুরু হয়েছে দূরপ্রাচ্যের অর্থনীতিবিষয়ক সম্মেলন ‘এস্টার্ন ইকোনমিক ফোরাম’। বুধবার এ সম্মেলনে যোগ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে নিজের বক্তব্যে রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি।

পশ্চিমকে ‘নিষেধাজ্ঞা জ্বরে’ আক্রান্ত বলে অভিহিত করে পুতিন বলেন, ‘আমি পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞার জ্বরের কথা বলছি। তারা অন্য দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার বশবর্তী করার মতো নির্লজ্জ ও আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।’

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয়দের জীবনযাত্রার মানকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলো খাদ্যের অভাবে ভুগছে। ইউক্রেনের শস্য নিয়ে দরিদ্র দেশগুলোকে ঠকাচ্ছে ইউরোপ।’

আরও পড়ুন: পুতিনের সঙ্গে ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষিত’ বৈঠকে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। অভিযান শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় এরই মধ্যে নর্ডস্ট্রিম পাইপ লাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে যে গ্যাস সরবরাহ করা হতো, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছে রাশিয়া।

ইউরোপের দেশগুলো গ্যাস ও জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। মস্কোর এ পদক্ষেপে পশ্চিমা নেতাদের অভিযোগ, রাশিয়া জ্বালানি বাজারকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।

তবে নিজের বক্তব্যে পশ্চিম নেতাদের এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুতিন। পাল্টা অভিযোগ করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে পশ্চিমারা। তবে তারা যতই চেষ্টা করুক, রাশিয়াকে কোণঠাসা করা অসম্ভব।’ পুতিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘কোণঠাসা হওয়ার বদলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক আগের চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়েছে।’

আরও পড়ুন: তুরস্ক আসলে কার পক্ষে?

এদিকে চীনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে ডেনিসভ জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানে আঞ্চলিক একটি সম্মেলনে তাদের ওই বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবারই (৬ সেপ্টেম্বর) চীন ও ভারতসহ বিশ্বের প্রায় ১৫টি দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রুশ বাহিনীর এক যৌথ সামরিক মহড়ায় যোগ দেন পুতিন। এদিকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার চিহ্ণ হিসেবে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে রুশ মুদ্রা রুবল ও ইউয়ানে আর্থিক লেনদেন করার ঘোষণা দিয়েছে চীন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!