রেমিট্যান্সে পিছিয়ে রংপুর!
<![CDATA[
রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় অভিবাসী শ্রমিক মাত্র এক দশমিক ৮ শতাংশ। সেখান থেকে রেমিট্যান্স আসে শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ। যেখানে চট্টগ্রাম বিভাগে অভিবাসী শ্রমিক ৩৯ শতাংশ, আর প্রবাসী আয় ৪২ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রচার-প্রচারণা ও দক্ষ শ্রমিকের অভাবের পাশাপাশি উচ্চব্যয়ের কারণে অনগ্রসর অঞ্চলটিতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না।
২০০৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১৮ বছরের পরিসংখ্যানের বরাতে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি দফতর বলছে, মাত্র সাড়ে ৩৫ হাজার শ্রমিক অভিবাসী রংপুর জেলা থেকে বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১০ সালের বিদেশে গেছেন ৮ হাজার ৩৩ জন এবং ২০১১ থেকে ২০২২ সালে গেছেন ২৩ হাজার ৫৮৬ জন।
করোনাকালীন ২০২০ সালে মাত্র ৪৭৩ জন অভিবাসী শ্রমিক রংপুর থেকে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। করোনা মহামারির সময় অভিবাসী শ্রমিকরা ঘরমুখী হলেও এখন নতুন করে বিদেশমুখী হতে শুরু করেছেন। ২০২১ সালে ১ হাজার ৬২২ জন আর ২০২২ সালে ৩ হাজার ৮৬৯ জন শ্রমিক গেছেন বিদেশে।
বিদেশগামী এক ব্যক্তি বলেন, রংপুর অঞ্চলের মানুষ অনেক আগে থেকেই বিদেশ যাওয়া নিয়ে আগ্রহী ছিল না। তবে এখন অনেকের কাছে শুনে ও খবর নিয়ে যাচ্ছে। কারণ সুযোগ-সুবিধা ভালো। আমরা দেশে যে শ্রম দেই, সেই তুলনায় মূল্য পাই না। তবে বিদেশে শ্রমের মূল্য ভালো। তাই সেখানে যাওয়া হচ্ছে।
যদিও এখনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা আর বিমানবন্দরসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এক ভুক্তভোগী বলেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়ে একটু সমস্যা করেই। শুনেছি বিমানবন্দরে এ সমস্যা বেশি হয়।
আরও পড়ুন: রেমিট্যান্স বাড়ছে, ২৭ দিনে এলো ১৬৭ কোটি ডলার
তবে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ, তথ্য ঘাটতি ও দালালদের দৌরাত্ম্য দূর করা গেলে রেমিট্যান্স বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদ।
তিনি বলেন, যদি কর্মসংস্থানের সঠিক তথ্য দেয়া যায় ও দালাল প্রতিরোধ করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় যে রংপুর থেকে আরও অনেক বেশি লোক যাওয়া সম্ভব।
তবে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে নানামুখী কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন রংপুর কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক আমেনা পারভীন। তিনি বলেন, অভিবাসনের ক্ষেত্রে দালালদের দৌরাত্ম্য কমানোর পাশাপাশি নিরাপদ, নৈতিক ও মর্যাদাপূর্ণ শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যই আমরা কাজ করছি।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও জনশক্তি রফতানি ব্যুরোর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ ৪২ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে চট্টগ্রাম বিভাগে। এই বিভাগে অভিবাসী শ্রমিক ৩৯ শতাংশ। আর ৩৫ শতাংশ রেমিট্যান্স পাওয়া ঢাকা বিভাগের অভিবাসী শ্রমিক ২৯ শতাংশ। তবে রংপুর বিভাগের এক দশমিক ৮ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিকের রেমিট্যান্স আয় দশমিক ছয় নয় শতাংশ।
]]>