শিশুর মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে প্লাস্টিকের খেলনা!
<![CDATA[
শিশুর কান্না থামাতে অথবা শিশুকে সুন্দর খেলার কিছু মুহূর্ত উপহার দিতে প্লাস্টিকের খেলনা হরহামেশাই কিনে দেন। এতে শিশুর উপকার করছেন বলে মনে হলেও আসলে করছেন মারাত্মক ক্ষতি।
আনন্দবাজার জানায়, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে প্লাস্টিকের খেলনা দিয়ে শিশু খেলার কারণে স্থূলতা, অ্যাজমার মতো বেশ কয়েকটি অসুস্থতার শিকার হচ্ছে শিশুরা।
কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছেন, শিশু খেলনা দিয়ে খেলার সময় কখনও কখনও সে খেলনা মুখেও লাগায়। যা শিশুর স্বাস্থ্যের ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: শীতে কোনটি সেরা, নিয়মিত গোসল নাকি অনিয়মিত
আমেরিকার প্লাইমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা প্লাস্টিকের খেলনা নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন। গবেষণায় মার্কিন বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের খেলনায় অ্যান্টিমনি, বেরিয়াম, ব্রোমিন, ক্যাডমিয়াম, সিসার, ফ্যাথালেটস, সেলেনিয়াম-সহ বিভিন্ন বিপজ্জনক রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে।
এসব উপাদান শিশুর শরীরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতির কারণ হতে পারে। খেলনা হাত দিয়ে নাড়া চাড়া করার মাধ্যমে হাত থেকে মুখে ক্ষতিকর উপাদান শরীরে প্রবেশ করে। আবার মুখে প্লাস্টিকের খেলনা প্রবেশের কারণে শিশুর লালার মাধ্যমেও শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান।
বাজারের অধিকাংশ খেলনাতেই ফ্যাথালেটস রয়েছে। প্লাস্টিক নরম করে তুলতে এই উপাদানটি ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই রাসায়নিক শিশুর অ্যাজমার কারণ। কখনও কখনও এটি শিশুদের মুটিয়ে যাওয়ার কারণও হয়ে ওঠে।
গবেষকরা বলছেন, শুধু প্লাস্টিকের খেলনা নয়, প্লাস্টিকের ফিডিং বোতল, থালাবাসন, বোতল ব্যবহারও শিশুর ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। বড়রা এই ঝুঁকিতে পরতে পারেন বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সায়েন্স এলার্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের মলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বড়দের তুলনায় শিশুর মলে এ পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। কারণ হিসেবে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির শিশু বিশেষজ্ঞ কুরুনথাচালাম কান্নান বলছেন, বড়দের মলে পাওয়া প্লাস্টিকের অস্তিত্ব মূলত প্যাকেটজাত খাবারের কারণে পাওয়া গিয়েছে। শিশুরা প্যাকেটজাত খাবারের পাশাপাশি প্লাস্টিকের খেলনা দিয়ে খেলতে অভ্যস্ত। তাই তাদের মলে এর পরিমাণ অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া গেছে বলে।
আরও পড়ুন: যে ভুলের কারণে ফ্রিজ দ্রুত নষ্ট হয়
এ বিষয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সফি আহমেদ মনে করেন, প্লাস্টিকের খেলনা থেকে ছোট শিশুদের জিহ্বায় ঘা হয়ে যায়, ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। খেলনা থেকে ময়লা মুখে গেলে পেটে পীড়া, ডায়রিয়া হতে পারে। প্লাস্টিক বেশি সময় মুখে থাকলে দাঁতেরও ক্ষতি হতে পারে। আবার প্লাস্টিক বেশি দিন গ্রহণ করলে কিডনি কিংবা লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শরীরের বিপিএ হরমোন স্তর নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রয়েছে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতাও। এ ছাড়াও প্লাস্টিকের খেলনা সামগ্রীতে টক্সিনের পরিমাণ রয়েছে প্রায় ৮৪ শতাংশ। এই বিপজ্জনক টক্সিন শিশুর বেড়ে ওঠা, বিকাশ এমনকি পরবর্তীকালে প্রজনন ক্ষমতাকেও ব্যহত করতে পারে বলে মনে করছেন মার্কিন গবেষকরা।
]]>




