বাংলাদেশ

শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত

<![CDATA[

সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়েছে ভারত। এবাদত হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানের পর তাদের ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হেনেছেন সাকিব আল হাসান।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার (০৭ ডিসেম্বর) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১২ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ ৪৬ রান। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়ের জন্য ৩৮ ওভারে তাদের প্রয়োজন আরও ২২৬ রান।

২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ দিয়ে ইনিংস শুরু করেন বিরাট কোহলি। তার ব্যাটের ধার দেখে মনে হচ্ছিল আজ বড় কোনো ইনিংসই ভারতকে উপহার দেবেন তিনি। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসা এবাদত সে সুযোগ দেননি কোহলিকে। এবাদতের করা শর্ট লেংথের পুল করতে গিয়ে ইনসাইড-এজে বোল্ড হন কোহলি। বলের গতিতে উপড়ে যায় স্টাম্প।

কোহলিকে হারানোর ধাক্কা সামনে না উঠতেই শিখর ধাওয়ানকে হারায় ভারত। তৃতীয় ওভার আক্রমণে আসা মুস্তাফিজুর রহমানের স্লো বাউন্সারে ভড়কে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে নেন ধাওয়ান। ১০ বলে ১ চারের মারে তিনি ৮ রান করেন।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন শ্রেয়াস আইয়ার ও ওয়াসিংটন সুন্দর। তবে তাদের জুটিকে স্থায়ী হতে দেননি সাকিব আল হাসান। ইনিংসের দশম ওভারে আক্রমণে এসেই সুন্দরকে মিডউইকেট লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন সাকিব। আইয়ারকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে এসেছেন লোকেশ রাহুল।

এর আগে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। সিরিজ বাঁচাতে সফরকারীদের প্রয়োজন ২৭২ রান। মাহমুদউল্লাহ ৭৭ রানে আউট হলেও মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ১০০ রান করে।

৮৩ বল মোকাবিলায় মিরাজের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৮ চার ও ৪ ছক্কার মারে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত ফেব্রুয়ারিতে ৮১ রান ছিল তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।

মিরাজের কাছ থেকে এমন বীরত্বপূর্ণ ইনিংস অবশ্য নতুন কিছু নয়। এর আগে প্রথম ম্যাচেও টাইগারদের জয়ে ব্যাট হাতে অবদান রেখেছিলেন এ অলরাউন্ডার। ভারতের মতো শক্তিশালী বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মুস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে দশম উইকেট জুটিতে তোলেন ৫১ রান। ৩৯ বলে তার ৩৮ রানের সে ইনিংসে ভর করে ১ উইকেটের জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ব্যর্থ হন দুই টাইগার ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস। বিজয় ৯ বলে ১১ আর লিটন ২৩ বলে ৭ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

আরও পড়ুন: রোহিতের হাতে রক্ত, ছাড়লেন মাঠ

আগের ম্যাচে গোল্ডেন ডাক উপহার দেয়া নাজমুল হোসেন শান্ত আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও। ৩৫ বলে ২১ রান করে তিনি উমরান মালিকের বলে বোল্ড হন। মাত্র ৫২ রানে তিন টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে টাইগাররা।

সে চাপ সামলাতে পারেননি সাকিবও। উল্টো চাপ বাড়িয়ে বিদায় নেন তিনি। ইনিংসের ১৭তম ওভারে বল করতে আসা ওয়াশিংটন সুন্দরকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে খাড়া ওপরে তুলেছিলেন সাকিব। উইকেটের পেছনে আরেকটু হলেই সংঘর্ষ হয়ে যেত শিখর ধাওয়ান ও মোহাম্মদ সিরাজের। সেটি হয়নি, সংঘর্ষ এড়িয়ে বল তালুবন্দি করে নেন ধাওয়ান।

পরের ওভারে ফিরে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপকে একেবারে ধসে দেন ওয়াশিংটন। পর পর দুই বলে ফেরান মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেন। সুন্দরের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মুশফিক সামনে এসে ব্লক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বলটি তার গ্লাভসে লেগে স্লিপে চলে যায় শিখর ধাওয়ানের কাছে। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি টাইগার উইকেটরক্ষকের। পরের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন আফিফ। ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।

আরও পড়ুন: শান্তর ব্যর্থতা প্রসঙ্গে জ্যাক ক্যালিসকে টানলেন ডমিঙ্গো

সপ্তম উইকেট জুটিতে চাপ সামলে উল্টো ভারতের ওপর চড়াও হন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শেষ দুই স্তম্ভ মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ। দলীয় ২১৭ রানে মিরাজের সঙ্গে ১৪৮ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। সপ্তম উইকেটে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত ফেব্রুয়ারিতে সপ্তম উইকেটে মিরাজ ও আফিফ মিলে ১৭৪ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন।

৭ চারের মারে ৯৬ বল মোকাবিলায় ৭৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৭ ওভারের প্রথম বলে উমরান মালিককে মারতে গিয়ে আউটসাইড-এজড হন মাহমুদউল্লাহ। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি তালুবন্দি করে নেন রাহুল।

অষ্টম উইকেটে ব্যাট হাতে নেমে টি-টোয়েন্টি ধরণে ব্যাট করেন নাসুম আহমেদ। তার সঙ্গে চার-ছক্কার উৎসবে যোগ দেন মিরাজও। দ্রুতগতিতে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। অন্যদিকে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১১ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন নাসুম। শেষ ২৪ বলে তারা তোলেন ৫৪ রান। আর তাতে সিরিজ জয়ের জন্য বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

ভারতের হয়ে ৩৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন ওয়াশিংটন সুন্দর। দুটি করে উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সিরাজ ও উমরান মালিক। 
 

 

 

 

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!