বাংলাদেশ

শেষ ওভারে সুপার উত্তেজনা, ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

<![CDATA[

পারল না পাকিস্তান। অনেক বাজিগরকে বোকা বানিয়ে ১৪ বছর পর নারী এশিয়া কাপ ফাইনালে উঠল শ্রীলঙ্কা। হিসাব মেলাতে পারেনি বেশ কিছু জুয়াড়ি। আগের খেলায় পাকিস্তান জিতেছিল, কিন্তু দৃশ্যপট বদলে গেল পরের ম্যাচেই। শেষ বলে বাজিমাত করল লঙ্কান মেয়েরা।

নারী এশিয়া কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) শেষ বলে জিততে পাকিস্তানের দরকার ছিল মাত্র ৩ রান। ১ রান হয়েছিল, ছুটছিল দ্বিতীয় রানের দিকে। সফল হলে রান সংখ্যা হতো সমান। তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচ গড়াতো সুপার ওভারে। তখন কী হতো কে জানে!

কিন্তু পাকিস্তানি ব্যাটার নিদা দার সময় মতো ফিরতে পারলেন না। ফিল্ডার কাভিসার ছোড়া বলে বেল ভেঙে দিলেন শ্রীলঙ্কার কিপার সঞ্জীবনী। আর তাতেই শ্রীলঙ্কা উঠে গেল ফাইনালে।

এমন মজাদার, উত্তেজনাপূর্ণ খেলা এবারের এশিয়া কাপে হয়নি। শেষ ওভার ছিল সাম্প্রতিককালে ক্রিকেটের সবচেয়ে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ। ভারত ও পাকিস্তানের খেলার পর সবার মনে এই ধারণা ছিল যে তারাই আবার ফাইনালে খেলবে।  তাছাড়া গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কা হেরেছিল পাকিস্তানের কাছে। তাই এমনটা হবে কেউ আন্দাজ করতে পারেনি। তবে অনেকেই বলছে আসল শক্তির পরিচয় দিয়েছিল তারা  বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে। যখন তারা নিগার সুলতানাদের ৭ ওভারেও মাত্র ৪১ রান করতে দেয়নি। তাছাড়া পাকিস্তানের কাছে আগে হারলেও সেটা বড় ব্যবধানের হার ছিল না। সেমির জয় ছিল ধারাবাহিকতার প্রমাণ।

আরও পড়ুন: অবশেষে পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে ভারত!

শ্রীলঙ্কা প্রথম ব্যাট করতে নেমে করে ৬ উইকেট হারিয়ে করে মাত্র ১২২ রান। সিলেটের উইকেটে বড় নয় আবার একেবারে ছোট স্কোরও নয়। তাদের দুর্বলতা ছিল বাউন্ডারি হাঁকানোতে। ১২২ স্কোরটা পাকিস্তানের কাছে বড় নয় প্রথমে এটাই মনে হচ্ছিল। ১৪ ওভার পর্যন্ত পাকিস্তান ব্যাট বলে সমান তালে লড়াই চালিয়ে গেছে। কিন্তু এরপরই চাপ কাজ করে পাকিস্তান শিবিরে। প্রয়োজনীয় রান রেটের সঙ্গে তাদের চলতি রানরেটের পার্থক্যটা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

শ্রীলঙ্কার ক্যাপ্টেন চামারি বলেছেন, চাপের খেলা ছিল কিন্তু তারা প্রস্তুত ছিলেন। তারা জানতেন পাওয়ার প্লের পর ৪ মারা সহজ নয় তাই চেপে ধরেছিলেন বোলিং আর ফিল্ডিং দিয়ে। প্রথম ৬ ওভার পাকিস্তান ভালো ব্যাট করলেও এরপর চাপ বাড়তে থাকে পাকিস্তান শিবিরে।

পাকিস্তানিরা তাদের ইনিংস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেছিল কিন্তু শেষ কয়েক ওভারে গুবলেট করে ফেলে। পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন বিসমা মারুফ জানান, তারা খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করছিলেন বেশির ভাগ সময় তবে তীরে এসে তরি ডুবেছে। শেষটা তারা রক্ষা করতে পারেননি পাকিস্তানের খেলোয়াড় নিদা দার হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন শেষ বলের পর পিচের ওপর। এত কাছে এসেও এত দূরে রয়ে গেল ফাইনাল!

আরও পড়ুন: ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতল পাকিস্তান

শেষ ওভারের মাথা খারাপ করা চমক ১৮ ওভার পর্যন্ত। বাজিতে ৮০% ছিল পাকিস্তানের জয় আর মাত্র ২০% শ্রীলঙ্কা।  কিন্তু ওই ওভারেই বিসমা রান আউট হয় ৪২ রান করে। তাতে হঠাৎ করে তৈরি হয় চাপ। ১৯ ওভারে আউট হয় আয়েশা, যোগ হয় মাত্র ৪ রান। শেষ ওভার তখন দরকার ৯ রান। বল করতে আসে অচিনি। দারুণ বোলিংয়ে চেপে ধরে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের ব্যাটাররা কোনোভাবেই বাউন্ডারি বের করতে পারছিল না। প্রথম ৫ বলে তারা কোনোভাবে ৬ রান সংগ্রহ করে। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রান।

২ রান নিলেও সুপার ওভারের মাধ্যমে দ্বিতীয় সুযোগ পেতে পাকিস্তান। কিন্তু শেষ বলে অচিনের করা ফুল টস নিদা দার ঠিকঠাক ব্যাটে সংযোগ করতে পারেননি। বল যায় ফিল্ডিংয়ে থাকা কাভিসার কাছে ক্যাচ হয়ে। কিন্তু সে ক্যাচটা ফেলে দেয় মাটিতে। বাটাররা তখন দৌড়ে ১ রান নিয়ে, বল ফেলতে দেখে ২ রানের জন্য দৌড় দেয়। কিন্তু কাভিসা মাথা ঠান্ডা রেখে বলটা ছুড়ে দেয় উইকেটকিপার সঞ্জীবনীর কাছে। সেও মাথা ঠান্ডা রেখে উইকেটে ছুড়ে না মেরে কাছে গিয়ে বেলটা ফেলে দেয়। নিদা আউট, পাকিস্তান আউট, শ্রীলঙ্কা ইন ফাইনাল।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!