বিনোদন

সংকটেও পাকিস্তানের তিন বাহিনী লুটেছে ২৫০০ কোটি রুপি

<![CDATA[

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দেশটির অডিটর জেনারেল (এজিপি)। প্রতিরক্ষা বাহিনীর আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ২০২১-২২ এর অডিট রিপোর্ট অনুসারে, তিন বাহিনী মিলে প্রায় ২৫০০ কোটি রুপি আত্মসাৎ করেছে।

এর মধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আত্মসাৎ করেছে ২১০০ কোটি রুপি। আর বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী মিলে লুটেছে ৩২০ কোটি রুপি। বিজনেস ইনসাইডারের বুধবারের (১২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু সেনা, বিমান বা নৌ বাহিনী নয়; আন্তঃবাহিনী সংস্থাগুলোর ৬ কোটি ৬০ লাখ রুপি, মিলিটারি অ্যাকাউন্টেন্ট জেনারেল ২০ কোটি ৩০ লাখ রুপি এবং মিলিটারি ল্যান্ড ও ক্যান্টনমেন্টের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ২০০ কোটি রুপির গরমিল পাওয়া গেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস, রুপির রেকর্ড দরপতন, আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকটে টালমাটাল অর্থনীতি নিয়ে বিপাকে রয়েছে পাকিস্তান। সঙ্গে রয়েছে রাজনীতি ও সরকার নিয়েও অনিশ্চয়তা।

সংকট কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে দ্রুত ঋণছাড়ের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফেরানোর প্রত্যাশা দেশটির সরকারের। এমন পরিস্থিতির মধ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের খবর সামনে এলো। 

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হিসাবে যেসব অনিয়ম পাওয়া গেছে, স্টোরের ভুল ব্যবস্থাপনার কারণে ১৮০০ কোটি রুপির গরমিল তার মধ্যে অন্যতম। অডিটে দেখা গেছে, কোনো উন্মুক্ত দরপত্র প্রতিযোগিতা ছাড়াই বিভিন্ন পণ্য কেনা হয়েছে। ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে দরপত্র প্রক্রিয়ায়ও। 

আরও পড়ুন: শপিংমলে আগুন লাগবে, আগেই ছবি এঁকে জানিয়েছিলেন যুবক!

অন্য বড় অনিয়মগুলো হয়েছে প্রকিউরমেন্ট বিধি না মেনে চুক্তির অনিয়মিত সমাপ্তির কারণে। এভাবে অনিয়ম করার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া অর্থের পরিমাণ ২০০ কোটি রুটি। এছাড়া সরকারি প্রকিউরমেন্ট বিধি ভঙ্গ করেই পণ্য ও অন্যান্য সেবা সামগ্রী কেনা হয়েছে।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, পেশোয়ারের কমবাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালের (সিএমএইচ) জন্য ওষুধ কেনার প্রক্রিয়ায় বড় অনিয়ম হয়েছে। এতে অনিয়ম করা অর্থের পরিমাণ ২৯ কোটি রুপি।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেটরি অথোরিটির একটি টেন্ডার নোটিশ জাল করে জমা দিয়ে ১৩ কোটি ২০ লাখ রুপির একটি বিল দেয়া হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ১ কোটি রুপির অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

পাকিস্তান বিমান বাহিনী বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৬১ কোটি রুপির গ্যাস ব্যবহার করেছে, যা পিপিআর আইনের পরিপন্থি। অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৪৮ কোটি ১০ লাখ রুপির লেনদেনের আলামত পাওয়া গেছে।

অডিট রিপোর্ট থেকে আরও জানা যায়, বিমান বাহিনী ১৮ কোটি ৮০ লাখ রুপির অপ্রয়োজনীয় ক্রীড়া সামগ্রী কিনেছে এবং ১০ কোটি ২০ লাখ রুপি ব্যয় করে স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি করেছে। ৮ কোটি ৩০ লাখ রুপি দিয়ে কিনেছে ক্রুজ বোট। বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পে বিদ্যুৎ সরবরাহে অবৈধভাবে ৫ কোটি ২০ লাখ রুপি লেনদেনের প্রমাণও পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাসে আগুন, ১৭ জনের মৃত্যু

এছাড়াও বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে হাসপাতাল উন্নয়ন তহবিলে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলারের অনিয়ম পাওয়া গেছে। অবৈধভাবে কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ রুপির। ফিটনেস ক্লাবে অননুমোদিতভাবে ব্যয় করা হয়েছে ৪০ লাখ রুপি।

অডিটের জমা দেয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৪০ লাখ রুপির উপহার অবৈধভাবে কিনেছে আন্তঃবাহিনী সংস্থাগুলো। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত নয়, এমন প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ রুপির স্টেশনারি পণ্য।

‘মিলিটারি ল্যান্ড অ্যান্ড ক্যান্টনমেন্ট’ খাতে ২০০ কোটি রুপির অনিয়ম পাওয়া গেছে। হায়দরাবাদ সেনানিবাসে চারটি ফ্লোরের অবৈধ নির্মাণকাজেরও আলামত পাওয়া গেছে। অডিট রিপোর্টে এমন আরও অনেক অনিয়ম ও অবৈধ ব্যয়ের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। যেখানে দেখা গেছে, প্রচলিত আইন ভেঙে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে। পাবলিক ও মিউনিসিপাল সার্ভিসের বাস্তবায়ন হয়নি, মানা হয়নি কোনোঅভ্যন্তরীণ নিয়মও।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!