সপ্তাহ ধরেই বায়ুদূষণে শহরের তালিকায় প্রথমে ঢাকা
<![CDATA[
সপ্তাহ ধরে বায়ুদূষণের কারণে দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে আছে রাজধানী ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে তথ্য দেয় এবং কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।
গত সাত দিনের এদিন শুক্রবারও (২৭ জানুয়ারি) বায়ুদূষণের কারণে দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ঢাকা। সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ২৫৬। গতকাল বৃহস্পতিবার একই সময় ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ৩৭২। সেদিক থেকে আজ বায়ুর মান অপেক্ষাকৃত উন্নত হলে ঢাকা শীর্ষস্থানে আছে।
একিউআই স্কোরে সকাল পৌনে ১০টায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোর (২৫৫)। তৃতীয় স্থানে ছিল বাগদাদ (২২১)। এরপরের স্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর (২১৮) ও চীনের উহান (১৮৫)।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের কাজ শেষে বায়ুদূষণের মাত্রা কমেছে ২২ শতাংশ
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ ‘মাঝারি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। আর ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
সাধারণত বায়ুর প্রতি ঘনমিটারে অতিক্ষুদ্র ধূলিকণার মানমাত্রা ৬৫ মাইক্রো গ্রাম।
এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় বাতাসে ধুলার পরিমাণ বাড়ে। সেক্ষেত্রে নির্মাণ প্রকল্প আর যানবাহনের ধোঁয়াই এটি বাড়ার প্রধান কারণ।
পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার সম্প্রতি সময় সংবাদকে বলেন, যে মানমাত্রা রয়েছে পরিবেশ অধিদফতর থেকে সেটি হলো ৬৫ মাইক্রো গ্রাম, তার প্রায় তিনগুণের বেশি রয়েছে ঢাকা শহরের বায়ুমানে ধুলা। ঢাকা শহরের এ রকম একটি কেন্দ্রে (বেইলি রোড) আমরা এ পরিস্থিতি লক্ষ করছি। মূলত নির্মাণকাজ এবং ইটের ভাটা রয়েছে সেখানে দূষণের মাত্রা দ্বিগুণ। চলতি মাসেই রাজধানীতে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে দ্বিগুণ।
এ মৌসুমে বৃষ্টি না থাকায় পুরো সময়টাতেই থাকতে হয় কুয়াশা আর ধুলার মিশেল ধোঁয়াশায় বলেও জানান তিনি।
নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বড় বড় মেগাপ্রজেক্ট থেকে শুরু করে আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে ভবনগুলো তৈরি হচ্ছে বা রাস্তায় যে খোঁড়াখুঁড়ি হচ্ছে সব জায়গাতে দেখা যাবে কোথায় কোনো আচ্ছাদন নেই, পুরো কাজ হচ্ছে উন্মুক্তভাবে। সরকারকে অবশ্যই এটা স্বাস্থ্যঝুঁকি মনে করে ধুলা দূষণটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর যারা মনিটরিংয়ে দায়িত্বে আছেন তাদের জবাবদিহি মধ্যে আনতে হবে।
]]>