সরিষা দানায় ভাগ্য বদলের স্বপ্ন
<![CDATA[
নরসিংদী জেলার কৃষকরা সরিষা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। জেলা গ্রাম এলাকা বর্তমানে হলুদের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সেইদিকে সবুজের মাঠ জুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলের হাসি। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় নরসিংদীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষার চাষ। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
সরিষা নরসিংদী জেলার সব উপজেলায় কমবেশি উৎপাদন হয়। তবে জেলার নরসিংদী সদর ও রায়পুরা এ দুই উপজেলায় অন্যান্য চারটি উপজেলার চেয়ে অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী জমিতে সরিষা উৎপাদন হয়।
সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর , পলাশ ৯৫ হেক্টর, শিবপুর ১৬৩ হেক্টর, মনোহরদী ২৬৫ হেক্টর, বেলাব ২২১ হেক্টর ও রায়পুরায় এক হাজার ৬ হেক্টর ৬৯০ জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের সমারহ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষার ক্ষেত।
চাষিরা জানান, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে ওই জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতোমধ্যে কোনো কোনো ক্ষেতে সরিষার দানা বাঁধতে শুরু করেছে। আবার কোথাও ফুল ফুটেছে।
আরও পড়ুন: অনুকূল আবহাওয়া: মেহেরপুরে বেড়েছে সরিষার আবাদ
নরসিংদীর সদর উপজেলার আলিপুরা গ্রামের সরিষা চাষি জামাল মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মণ। প্রতি মণ সরিষার বাজার মূল্য ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।
রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ গ্রামের চাষি হযরত আলী বলেন, এবার প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে বারী ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি বাম্পার ফলনের আশা করছি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সরিষার চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কম হওয়ায় অনেক কৃষক এ ফসল চাষে ঝুঁকেছেন। সরিষার তোলার পর একই জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় ৫ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ২০৪ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। চলতি সরিষা মৌসুমে নরসিংদী জেলায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে জেলায় সরিষার চাষাবাদ হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন।
আরও পড়ুন: শেরপুরের মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের চাদর
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ড. মো. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে তা অত্যন্ত ইতিবাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের আরও একটি সাফল্য। দেশি জাতের সরিষার ৬০ থেকে ৭০ দিনে এবং উচ্চ ফলন শীল জাতের সরিষা উঠতে সময় লাগে ৭৫ থেকে ৮০ দিন।
তিনি জানান, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং তেলের আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে।
]]>