সহজ হবে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য
<![CDATA[
মধুমতি সেতু উদ্বোধনে বাণিজ্যিক খাতে নতুন স্বপ্ন দেখছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর যশোরের ব্যবসায়ী ও বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা। এ সেতু চালুর ফলে এখন ঢাকার সঙ্গে যশোরের দূরত্ব ৩৫ এবং বেনাপোল বন্দরের দূরত্ব ৭১ কিলোমিটার কমবে। এতে দেশের বাণিজ্যিক দ্বার আরও প্রশস্ত হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীারা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতায় জাইকার অর্থায়নে ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি নড়াইলের কালনা পয়েন্টে ৯৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শুরু হয়েছিল মধুমতি সেতু। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার।
বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতুর পর আজ মধুমতি সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের আরও একটি স্বপ্ন পূরণ করল বঙ্গবন্ধু কন্যা। এ সেতু উদ্বোধনে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন যশোর অঞ্চলের মানুষ। নড়াইলের পাশের জেলা যশোরে রয়েছে বৃহৎ সবজি হাট এবং দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর।
দেশের শিল্প কলকারখানায় ব্যবহৃত ৭০ শতাংশ পণ্য আমদানি বেনাপোল বন্দর দিয়ে হয়। নড়াইলের কালনায় মধুমতি নদীতে সেতু না থাকায় ফেরি পারাপারে দুর্ভোগের শেষ ছিল না মানুষের। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ফরিদপুর-মাওয়া হয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হতো ঢাকায়। এতে একদিকে যেমন অতিরিক্ত সময় ক্ষেপণ হতো তেমনি পরিবহন খরচ বাড়ত। পণ্য পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতেন ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে নড়াইলবাসীর দাবির মুখে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধুমতি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। আজ সেই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন করলেন প্রতিশ্রুতি।
আরও পড়ুন: খুলল দক্ষিণাঞ্চলবাসীর প্রাণের ‘মধুমতি সেতু’
সবজি ব্যবসায়ী রহমত জানান, আগে আমাদের সবজি ফেরিতে করে নিয়ে যেতে হতো। এতে অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে যেত। তবে এ সেতুর ফলে আমাদের যাতায়াত আরও সহজ হয়েছে।
আমদানি পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক চালক মোস্তাফিজ জানান, আগে ফেরি হয়ে ঢাকায় যেতে ২ থেকে ৩ দিন ঘাটে সিরিয়ালে দাঁড়াতে হতো। এখন ঘাটের ভোগান্তি এড়িয়ে সেতু দিয়ে সহজেই এ পথ পাড়ি দিতে পারব।
বেনাপোল ট্রাক ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুজ্জামান সনি জানান, ‘মধুমতি সেতু ব্যবহারে মাত্র ৫ ঘণ্টায় পণ্যবাহী ট্রাক পৌঁছাবে ঢাকায়। এতে খরচ ও সময় সাশ্রয়ী হবে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু ব্যবহার / ভারত থেকে সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, ‘সেতু চালুর ফলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা। এতে এ রুট ব্যবহারে আমদানি বৃদ্ধিতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।’
ফেডারেল অব বাংলাদেশ কাস্টমস কিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, মধুমতি সেতু নির্মাণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ব্যবসা সহজ করে দেয়ায় বাণিজ্য সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, মধুমতি সেতু ব্যবহারে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে আমদানিকারকরা আরও বেশি উৎসাহিত হবেন। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
]]>