সাকিবের নেতৃত্বে এশিয়া ও বিশ্বকাপে আধিপত্য করবে বাংলাদেশ: ওয়াটসন
সাকিব আল হাসানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এক সময়ের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিং অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। তার মতে, টাইগার অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আধিপত্য করবে বাংলাদেশ।
দ্য আইসিসি রিভিউ অনুষ্ঠানে সোমবার (২২ আগস্ট) অজি সাবেক তারকাকে উপস্থাপক প্রশ্ন করেন, সাকিব আল হাসানকে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব দেয়া বাংলাদেশের সঠিক সিদ্ধান্ত কি না।
জবাবে ওয়াটসন বলেন, ‘অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত। সাকিবের মধ্যে নেতৃত্বের সব গুণ আছে। আমি মনে করি, তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ দল পুনরুজ্জীবিত হবে।’
ওয়াটসন যোগ করেন, ‘সে খুবই অভিজ্ঞ। সে বাংলাদেশকে অনেক সময় নেতৃত্ব দিয়েছে। অনেকগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তার নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে। বিশেষ করে বিপিএলে।’
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ তারকা আরও মনে করেন, টাইগার অলরাউন্ডার এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে তার সেরা ফর্মে ফিরবেন। চলতি মাসের শেষদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপ। আর নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বসবে অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর।
ওয়াটসন বলেন, ‘দল যখন চাপে থাকবে তখন তার নেয়া প্রতিটি সিদ্ধান্ত হবে অমূল্য। যদি সে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে নিজের পারফরম্যান্সের ধারা আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে, তাহলে আমি আশ্চর্য হব।’
২০০২ সালে অজিদের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ওয়াটসনের। ২০১৬ সালে অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত দলের হয়ে তিনি সমানে পারফরম্যান্স করেছেন ব্যাট ও বল হাতে। তাই একজন অলরাউন্ডারের প্রতিবন্ধকতাগুলো খুব ভালোই জানা আছে তার।
তিনি বলেন, ‘লাগাতার ম্যাচ খেলে যাওয়া একজন অলরাউন্ডারের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। শারীরিক সক্ষমতা ও শক্তির বিষয়ে নিজের খেয়াল রাখতে হয়। বিশেষ করে ব্যাটিং করার সময়, দীর্ঘক্ষণ শারীরিক ও মানসিক শক্তি ধরে রাখতে হয়।’
ওয়াটসনের চোখে সাকিবের এ গুণগুলো আছে। যার কারণে ক্রিকেটে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি তার অর্জনের খাতা ভারি করে চলছেন। তিনি বলেন, ‘যেটা সাকিব করে। এটা খুবই কঠিন। যদিও বাইরে থেকে মনে হয়, স্পিন অলরাউন্ডারদের জন্য খুব বেশি শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু বিশেষ করে, উপমহাদেশীয় কন্ডিশনে সে অনেক বল করে। তারপর তাকে আবার ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব সামলাতে হয়।’
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটে ব্যস্ত সূচির কারণে অনেকে ক্রিকেটার একটি নির্দিষ্ট সংস্করণ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। এই যেমন কিছুদিন আগে ইংল্যান্ডের তারকা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। আবার নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট চাপ কমাতে বোর্ডের চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন। অথচ ২০০৬ সালে অভিষেকের পর থেকে সাকিব সমানে খেলে যাচ্ছেন তিন সংস্করণেই। আবার আইপিএল, বিপিএল, সিপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো তো আছেই।
ওয়াটসন বলেন, ‘তিন ফরম্যাটে খেলার সক্ষমতা কেবল সাকিবের মধ্যে আছে। এটা খুবই বিশেষ গুণ। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের এত ব্যস্ত সূচি আবার ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট, এত কিছুর মধ্যে তিন সংস্করণে খেলা যাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার। তবে এদিক দিয়ে সাকিব সফল।’
২০০৯ সালে শেন ওয়াটসনকে হটিয়ে ওয়ানডে অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে নাম্বার ওয়ান পজিশন দখলে নেন সাকিব আল হাসান। এরপর দুজনের প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি সময় ধরে আধিপত্য করে গেছেন টাইগার অলরাউন্ডারই। সাকিব এক সময় তিন সংস্করণেই সেরা অলরাউন্ডারের জায়গা দখল করে নেন। ততদিনে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়ে অবসরে চলে যান ওয়াটসন। তাই সাকিবকে অজি তারকা প্রশংসায় ভাসাবেন এটাই স্বাভাবিক।