সাজেকে গিয়ে বিপাকে পর্যটকরা, রাত কাটাচ্ছেন মসজিদেও
<![CDATA[
মেঘের রাজ্য খ্যাত সাজেক সারা বছরই পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এ কারণে বছরজুড়েই সেখানে থাকে পর্যটকের চাপ। তবে ছুটির দিনগুলোতে সেই চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। দুর্গাপূজা, সাপ্তাহিক ছুটি ও ঈদে মিলাদুন্নবীসহ টানা ছুটিতে পর্যটকমুখর হয়ে উঠেছে সাজেক ভ্যালি। তবে পাহাড়ের রূপ উপভোগ করতে গিয়ে এবারের টানা ছুটিতে সেখানে পর্যটকের চাপে দেখা দিয়েছে আবাসন সংকট। ফলে বাধ্য হয়েই অনেক পর্যটককে রাত কাটাতে হচ্ছে গাড়িতে কিংবা মসজিদে।
স্থানীয় হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেববর্মন বলেন, যারা পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া সাজেকে এসেছেন তারাই মূলত বিপাকে পড়েছেন। তাদের জন্য আমাদের কষ্ট লাগছে। আমাদের কটেজ আছে ১১২টি। সেগুলোতে প্রায় ৪ হাজার পর্যটক থাকতে পারেন। কিন্তু সাজেকে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) তিন শতাধিক গাড়ি প্রবেশ করেছে। আমাদের হিসাব মতে, ২০০ গাড়ি আসলেই প্রায় ৪ হাজার পর্যটক হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, অনেক পর্যটককে আমরা আশপাশের বাড়িগুলোতে রাতে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কিন্তু তাতেও সবার আবাসন ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। সুবর্ণ দেববর্মন পর্যটকদের উদ্দেশে বলেন, আগাম রুম বুকিং ছাড়া কেউ যেন সাজেক বেড়াতে না আসেন। এতে পর্যটকদের কষ্ট হয়। অনেকে মনে করেন, গেলেই কোনো না কোনো ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে যে পাহাড়ে সবকিছুই সীমিত।
আরও পড়ুন: পাহাড়-মেঘের মিতালি দেখতে সাজেকে ভিড় করছেন পর্যটকরা
মঈন উদ্দিন নামে সাজেকে বেড়াতে যাওয়া এক পর্যটক বলেন, আমি বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) এসেছি। রুম বুকিং দিয়েছিলাম অনেক আগে। এর আগেও বহুবার এসেছি, কিন্তু কখনই এত মানুষ দেখিনি। লম্বা ছুটির কারণে এমন চাপ। এবার রিসোর্ট ভাড়া ও খাবারের দামও কিছুটা বেশি মনে হয়েছে।
সাজেকে বেড়াতে গিয়ে বিপাকে পড়া পর্যটক পিকু দাশ জানান, আমারা ১২ জন বন্ধু মিলে হঠাৎ প্ল্যান করে সাজেকে এসেছি। কিন্তু কোনো রিসোর্টে রুম পাইনি। বাধ্য হয়ে গাড়িতেই রাত কাটাতে হচ্ছে। তবে আক্ষেপ নেই, মনোরম পরিবেশে আড্ডা দিয়ে সময় কাটিয়ে দেব।
রুম বুকিং ছাড়া আসার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কিনা জানতে চাইলে পিকু দাশ বলেন, মোটেই ঠিক হয়নি। হুট করে আসার ব্যাপারে অন্যদের নিরুৎসাহিত করছি।
সাজেকের মেঘাদ্রি ইকো রিসোর্টের ম্যানেজার বাদন দাশ জানান, এমনিতেই শুক্র-শনিবার প্রচুর পর্যটকের চাপ থাকে। এবারের লম্বা ছুটিতে পর্যটকের সংখ্যা আরও বেড়েছে। ৫ অক্টোবর থেকেই অনেক চাপ যাচ্ছে। রাতে অনেকে রুম খুঁজতে আসেন। কিন্তু আমাদের এখানে তো কোনো রুম খালি থাকে না। ৫ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের সব রুমই ২ মাস আগে থেকে বুকিং।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে শীতকালে ঘুরতে যাওয়ার মতো জায়গা কোনগুলো?
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার জানান, রুম সংকটের বিষয়টি শুনেছি। তবে যারা আগে রুম বুকিং করে সাজেক গিয়েছে তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। পর্যটকদেরও জেনে-শুনে আসা উচিত। তাহলে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে না। সব পর্যটককে এ বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়ার অনুরোধ করছি।
]]>