সিন্ধু পানি চুক্তি সংশোধনে পাকিস্তানকে ভারতের নোটিশ
<![CDATA[
৬২ বছরের পুরনো ‘সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি’র (আইডব্লিউটি) সংশোধনে পাকিস্তানকে নোটিশ দিয়েছে ভারত। গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সিন্ধু পানিবণ্টন প্রকল্পের কমিশনারের মাধ্যমে নোটিশটি পাঠায় দেশটির সরকার।
ভারত সরকারের ভাষ্য, পাকিস্তানের একাধিক ভুল পদক্ষেপের ফলেই ‘সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি’ বাস্তবায়নের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ চুক্তি সংশোধনের জন্য নোটিশ দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এ চুক্তি হওয়ার পর পানিবণ্টনে ভারত বরাবরই নরম মনোভাব দেখিয়ে এসেছে।
পাকিস্তানের কার্যকলাপে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত সরকার আরও বলেছে, ভারত অক্ষরে অক্ষরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি বাস্তবায়নে নমনীয় মনোভাব দেখিয়ে আসছে। কিন্তু পাকিস্তানের দিক থেকে কোনো সাহায্য পায়নি ভারত।
ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকেই সিন্ধু নদীর পানি ব্যবহার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে টানাপোড়েন চলছে। বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ ৯ বছর আলাপ–আলোচনার পর ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের করাচিতে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: মাঝ-আকাশে ভারতীয় দুই যুদ্ধবিমানের সংঘর্ষ, নিহত ১
চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে এই প্রথমবার তাতে পরিবর্তন করার নোটিশ জারি করা হলো। সিন্ধু পানি চুক্তির লঙ্ঘন সংশোধনের জন্য পাকিস্তানকে ৯০ দিনের মধ্যে ভারতের সঙ্গে আলোচনার একটি সুযোগ করে দেয়া হবে। এর মাধ্যমে গত ৬২ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা অনুযায়ী চুক্তিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
ভারত সরকার বলেছে, ভারত পারস্পরিকভাবে সিন্ধু পানি চুক্তিতে একটি মধ্যস্থতার পথ খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পাকিস্তান ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের ৫টি বৈঠকের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করে এসেছে। এ কারণেই এখন পাকিস্তানকে নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
২০১৫ সালে ভারতের ঝিলম নদীতে কিষেনগঙ্গা ও রাতলে পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আপত্তি তুলেছিল পাকিস্তান। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, সিন্ধু পানি চুক্তি মেনেই প্রকল্পে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি ব্যবহার করবে ভারত। কিন্তু তাতে কান দেয়নি পাকিস্তান।
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডে হাসপাতালে আগুন, চিকিৎসক যুগলসহ মৃত ৫
ভারতের নোটিশ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে কোর্ট অব আরবিট্রেশনে কিষেনগঙ্গা ও রাতলে পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আপত্তি নিয়ে শুনানি চলছে। সেদিক থেকে নজর ঘোরানোর জন্যই ভারত এ পন্থা অবলম্বন করেছে।
ভারত বলছে, সিন্ধু চুক্তি নিয়ে পারস্পরিকভাবে আলাপ-আলোচনার পথেও বসতে নারাজ পাকিস্তান। ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বারবার চেষ্টা চালানো হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিন্ধু কমিশনের পাঁচটি বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরা হয়। কিন্তু এ সম্পর্কে আলোচনা করতে অস্বীকার করে পাকিস্তান। সেই জন্য চুক্তি সংশোধন চাইছে ভারত।
]]>