বাংলাদেশ

সিলেটে দুই তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, ‘সহায়তাকারী’ নারী গ্রেফতার

<![CDATA[

সিলেটে আবাসিক হোটেলে দুই তরুণীকে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি তানজিনা আক্তার তানিয়াকে (২৫) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর শিবগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আসামিকে জালালাবাদ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‍্যাব-৯।

গ্রেফতার তানিয়া দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়সিদ্দি গ্রামের দবির মিয়ার মেয়ে। তিনি নগরীর শাহজালাল উপশহরে বসবাস করেন।

জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খালেদ মামুন জানান, আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে দুই তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলার এক আসামিকে বুধবার আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে র‍্যাব। আজই তাকে আদালতে তোলা হবে।

এর আগে চাঞ্চল্যকর ওই ধর্ষণ মামলার আরেক আসামি মােহাইমিন রহমান রাহিকে (৩৩) গত ২ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। রাহি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে।

উল্লেখ্য, ২৩ আগস্ট দিবাগত রাতে মহানগরীর পাঠানটুলাস্থ জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের দুটি কক্ষে দুই তরুণীকে আটকে রেখে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ভিকটিম দুই তরুণী সিলেটের জালালাবাদ থানায় পৃথক মামলা করেন।

আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে এসে গণধর্ষণের শিকার কিশোরী

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার এক তরুণী (১৮) কয়েক মাস আগে আইএলটিএস পড়ার জন্য সিলেট মহানগরীতে এসে আরেক তরুণীর (২৫) সঙ্গে শাহজালাল উপশহরের একটি বাসায় থাকতে শুরু করেন। উপশহর এলাকায় থাকার সুবাধে ওই এলাকার একটি বিউটি পার্লারে তানজিনা আক্তার তানিয়ার সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তানিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে সিলেটে আইএলটিএস করতে আসা সেই তরুণীর।

বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের  সুবাদে গত ২৩ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানিয়া ফোন করে ওই তরুণীকে বলেন, তার ভাইয়ের জন্য এবি পজেটিভ রক্ত প্রয়োজন। ওই তরুণীর এবি পজেটিভ রক্ত হওয়ায় তিনি যেন এক ব্যাগ রক্ত দেওয়ার জন্য রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে যান। এমন ফোন পেয়ে ওই তরুণী তার বন্ধবীকে (২৫) নিয়ে রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালের সামনে যান। সেখানে গিয়ে তানিয়াকে দেখতে পেয়ে রক্ত দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি ওই দুই তরুণীকে জানান- রক্ত দেওয়ার আগে তার এক কাজিনের বাসায় একটু প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন শেষ করে তারা হাসপাতালে যাবেন। এ কথা বলে কৌশলে ওই দুই তরুণীকে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী গ্রিন হিল আবাসিক হোটেলের ৪র্থ তলায় নিয়ে যান তানিয়া এবং তাদের দুজনকে আলাদা আলাদা কক্ষে বসিয়ে রাখেন। এ সময় তানিয়ার সহযোগী কয়েকজন যুবক এসে ওই দুই তরুণীকে আটকে রাখেন এবং রাত সাড়ে ১১টা থেকে একের পর এক ১০-১২ জন যুবক তাদের দুজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এছাড়াও ভিকটিম এক তরুণীর (১৮) কাছ থেকে তার মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা পয়সা ছিনিয়ে দেন তানিয়া ও ধর্ষকরা।

পরদিন ২৪ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে ভিকটিম দুই তরুণীকে এক কক্ষে নিয়ে তাদের কাছ থেকে ‘ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি’ এ মর্মে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয় এবং এ কথাগুলো মোবাইল ফোনে ভিডিও করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পর দুই ভিকটিম তরুণী জালালাবাদ থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন।

তানিয়া ছাড়াও এই দুই মামলার আসমিরা হলেন- সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মোহাইমিন রহমান রাহি (৩৩), সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার গোবিগন্দগঞ্জ গ্রামের মৃত তহুর আলীর ছেলে জুবেল (৩১), সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকার আলী আকবরের ছেলে রানা আহমদ শিপলু ওরফে শিবলু (৩৫), সুনামগঞ্জ সদর থানার হরিনাপাট গ্রামের ফরহাদ রাজা চৌধুরীর ছেলে নাবিল রাজা চৌধুরী (৩৫) ও সুজন (৩৫) এবং অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জন।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!