সুপারি ফেরি করে চলছে না মনি-মুক্তা দম্পতির সংসার
<![CDATA[
দৃষ্টিহীন স্বামীর চোখে নেই আলো। সেই স্বামীকে সঙ্গে নিয়েই পথে পথে ঘুরে সুপারি বিক্রি করে চলেছেন জীবনযুদ্ধের লড়াকু সৈনিক মুক্তা হালদার। তিন ছেলেমেয়ে আর স্বামীকে নিয়ে এক সংগ্রামী জীবন তার।
এখানেই শেষ নয়। দৃষ্টিহীন হলেও মনি হালদার নিপুণ হাতে কাটেন সুপারির কুচি। আর তা দোকানে দোকানে বিক্রি করে চলছে দৃষ্টিহীন মনি হালদার ও মুক্তা হালদারের সংসার।
ঝালকাঠি শহরের কাঠপট্টি এলাকার মনি হালদার। যিনি একসময় ছিলেন ঠিকাদার। একটি দুর্ঘটনায় হারিয়ে ফেলেন চোখের দৃষ্টিশক্তি। সুখের সংসারে নেমে আসে অমানিশা। ২৪ বছর আগে দৃষ্টিশক্তি হারান সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মনি হালদার। তিনি দৃষ্টিহীন হওয়ার পর অসহায় হয়ে পড়ে পুরো পরিবার।
আরও পড়ুন: শীতের পিঠা বিক্রি করে চলে হাসিনার সংসার
পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মনি হালদার পড়েন অকুল পাথারে। ছেলেমেয়ের স্কুলের বই-খাতা কেনা ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে পড়েন সীমাহীন বিপাকে। সংসার চালাতে অবশেষে অন্যের দোকানের সুপারি কেটে দিয়ে রোজগারের পথ বেছে নেন। পরে নিজেই বাজার থেকে সুপারি কিনে তা কেটে শুরু করেন ছোট ব্যবসা। তবে পুঁজি সংকটে এ ব্যবসাও এগিয়ে নিতে পারছেন না তিনি। দৃষ্টিশক্তি না থাকায় কোনো এনজিও থেকেও মিলছে না ঋণসহায়তা। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও নিখুঁতভাবে সুপারি কাটেন মনি হালদার। প্রতিদিন ২০ কেজি সুপারি কেটে তা বিক্রি করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ করেন তিনি। আর তা দিয়ে চলে সংসারের চাকা। সকাল হলে দৃষ্টিহীন স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রী মনি হালদার সুপারি বিক্রি করতে ছুটে যান শহরে পানের দোকানে। দোকানিরাও ভালোবেসে তাদের সুপারি কিনে নেন।
আরও পড়ুন: ঘাস-পাতা বিক্রি করেই চলে বৃদ্ধ জামাল উদ্দিনের সংসার
মুক্তা হালদার জানান, তার স্বামী দুই চোখে দেখতে পান না। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসাও করাতে পারেননি। খুবই কষ্টে দিন কাটছে তাদের। ছেলেমেয়েদের দু-বেলা ভালো খাবার ও কাপড় দিতে পারছেন না। অর্থ সংকটে ব্যবসাও করতে পারছেন না ঠিকমতো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবেকুন নাহার বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে পরিবারটির খোঁজ নিয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
]]>