খেলা

স্বচ্ছতা নিশ্চিতে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করার তাগিদ

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে সারা দেশেই টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর। সম্প্রতি সময় সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রায় ২৫ শতাংশ করে টাকা বাঁচিয়েছে, এভাবে যদি প্রতিনিয়ত টাকা বাঁচানো যায়, তাহলে সেই ক্ষেত্রে বেঁচে যাওয়া অর্থ আমরা পুনর্বিনিয়োগ করতে পারব। ঠিক যখন প্রয়োজন হবে তখন সেটা নিয়ে খরচ করা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করে অনন্য নজির স্থাপন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। গত ৭ মাস ধরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রিতে কোটি কোটি টাকার অপচয় ঠেকানোর দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তারা। দুর্নীতি বন্ধে এমন পরিষ্কার উপায় জানার পরও আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান বলেন, ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কাকে আমরা কাজটি দেব, কাজটি গত ৫ থেকে ৬ মাস ধরে পাইলটিং করা হলো। সবদিক থেকে যদি মনে হয় ঠিক আছে, সেই কাজটি সেভাবেই সম্পূর্ণভাবে করা হলো। এখন আমরা সেই কাজটি দিতে পারি, এভাবে কাজটি করতে হয়েছে, ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটালের কাজটি আমাদের শুরু হয়ে গেছে এরই মধ্যে।

দেশব্যাপী টিসিবির পণ্যের চাহিদা যখন তুঙ্গে তখন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসির হিসাব অনুসারে গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বরাদ্দ থাকার পরও পণ্য কিনতে আসেননি ফ্যামিলি কার্ডধারী ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ মানুষ। পাশাপাশি আরও কিছু পরিষ্কার তথ্য পাওয়া গেছে ডিলারদের কাছ থেকেও।

ডিএনসিসির টিসিবির ডিলার মাসুদ পারভেজ জানান, অ্যাপে তথ্য থাকায় কোনো ফাঁকি দেয়ার উপায় নেই। যদি ৯০০ কার্ড থাকে তার মধ্যে ৫০০ কার্ড গেল, তারা (কর্তৃপক্ষ) জানতে পারে, ৪০০ কার্ড বাকি আছে, এমন পাই টু পাই হিসাব হচ্ছে। এতে বিক্রি না করা কার্ডের মালামালের বেঁচে যাওয়া কার্ডের হিসাব থেকে যাচ্ছে। কোনো রকম দুর্নীতি হচ্ছে না।

এতে প্রতি মাসে কতো কোটি টাকার অপচয় রোধ করা গেছে। আর এতে ব্যয় হয়েছে কত? টিসিবির পণ্য কেনার কয়েকটি তথ্য ও ভর্তুকির হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে সরকারের ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার বেশি অপচয় ঠেকিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। অথচ একেকটি কার্ড ডিজিটাল করতে মাত্র ব্যয় হয়েছে ১০ টাকারও কম।

ঢাকা উত্তর সিটির হিসাব যখন এতটাই স্বচ্ছ, তখন অ্যাপের বাইরে বিক্রির হিসাবটাও পরিষ্কার নাকি জলঘোলা?

টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ন কবীর বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তুলনায় দক্ষিণের ক্ষেত্রে একটু হিমশিম খেতে হয়, কিছুটা ধারণার ওপর চলে যায়। তারপরও ধারণা তো থাকেই, এই ওয়ার্ডে কতগুলো মালামাল যেতে পারে।

এ অবস্থায় সরকারের ভর্তুকি ব্যয়ে অপচয় দূর করতে দ্রুত ডিএনসিসির পথে হাঁটার তাগিদ দেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর।

এদিকে গত বছর থেকেই সব ফ্যামিলি কার্ড ডিজিটাল করার উদ্যোগের কথা শুনিয়ে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু কতদিনে বাস্তবায়ন হবে সেটি?

তবে কাজ শুরু হলে আড়াই মাসের মধ্যেই তা শেষ করা সম্ভব বলে জানান টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান।
 

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!