হার্টের সার্জারি করবে রোবট
<![CDATA[
হার্টের সার্জারি হবে রোবটের মাধ্যমে। একটি রোবট হাতের সঙ্গে সংযুক্ত করে খুব ছোট সরঞ্জাম ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার করা হবে। এক কথায় রোবটের সহায়তায় অস্ত্রোপচার পদ্ধতি। এ রোবোটিক সার্জারির ঝুঁকি ও জটিলতা খুবই কম। ভারতের কলকাতার অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের এক দল চিকিৎসক আগামীতে এ পদ্ধতিতে হার্ট সার্জারি করবে। এখন চলছে নানা প্রস্তুতি।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতার পাঁচ তারকা হোটেল আইসিটি রয়েল বেঙ্গলে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হার্ট সার্জারি সম্পর্কে নতুন এ তথ্য জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল কলকাতার পরিচালক কার্ডিওথোরাসিক ও ভাস্কুলার সার্জন ডা. সুশান মুখোপাধ্যায় জানান, রোবটিক আর্ম কম্পিউটার ব্যবহার করে সার্জন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে এটি। কারণ, এখন নতুন নতুন যন্ত্রপাতির উদ্ভব হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানও এগিয়ে যাচ্ছে। আমারও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের পরের টার্গেট রোবটিক হার্ট সার্জারি।
সুশান মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ইদানীংকালে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতিতে হার্ট সার্জারি আর জটিল ও সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়া নয়। আধুনিক পদ্ধতিতে অনেক দ্রুত হৃদপিণ্ডে অস্ত্রোপচার সম্ভব।’
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের এক মাস আগেই সংকেত দেয় শরীর
তিনি বলেন, যদিও গত এক যুগ ধরে এই হাসপাতালে কোনো ধরনের কাটা ছেঁড়া ছাড়াই ছোট্ট একটি ছিদ্র করে হার্টের বাইপাস সার্জারি করা হচ্ছে। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় মিনিম্যালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এমআইসিএস)। এ পদ্ধতিতে মাত্র ২-৩ ইঞ্চি বুক কেটে হার্ট সার্জারি করা হয়। কষ্ট ও রক্তক্ষরণ কম হয়। কোনো হাড় কাটা হয় না। রোগী ৭ দিনে মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠে। সময় লাগে একেবারে কম। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা যায় এবং এটি খুবই নিরাপদ। যদিও এর আগের প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারিতে ৮-১০ ইঞ্চির মত কাটতে হতো। রোগীরা ভয় পেত এটি করাতে। সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সময় লাগতো দুই থেকে তিন মাস। এমনকি ৭০-৮০ বছর বয়সী রোগীরা এ পদ্ধতিতে নিরাপদ। আমরা বেশ বয়স্ক রোগীরও সার্জারি করিয়েছি।
আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকে বাঁচাতে পারে সিপিআর
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগে প্রচলিত ওপেন হার্ট সার্জারি ছিল ভালভ মেরামত বা প্রতিস্থাপন, হার্টের ছিদ্র বন্ধ করার একমাত্র সমাধান। কিন্তু এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এমআইসিএস ব্যবহার করে বিভিন্ন আরও উন্নত চিকিৎসা করা হয়। এমআইসিএস মাধ্যমে যে সব অস্ত্রোপচার করা হয় সেগুলো হল মিনিম্যালি ইনভেসিভ বাইপাস সার্জারি, এন্ডোস্কোপিক ভেইন এবং রেডিয়াল আর্টারি হার্ভেস্টিং।
এর আগে অ্যাপোলো হাসপাতালে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রানা দাশ গুপ্ত জানান, এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজারেরও বেশি এমআইসিএস সফলভাবে করেছে অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল। প্রতি মাসে ৪০টির বেশি মিনিম্যালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এমআইসিএস) করছে। তবে এবার আমাদের টার্গেট রোবটের মাধ্যমে হার্ট সার্জারি।
আরও পড়ুন: শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি, বাঁচতে যা করবেন
অ্যাপোলো হাসাপাতালের বিজনেস ডেভেলপমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুম্মুনাথ ভট্টাচার্য জানান, কম খরচে হাসপাতালে এক যুগ ধরে এমআইসিএসের মাধ্যমে হাট সার্জারি হচ্ছে। এজন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে রোগী আসেন। পাশে বাংলাদেশ থেকেও আসেন। রোগীদের সেবার মান বাড়াতে আমরা নানা দেশে ও বিভাগীয় শহরে তথ্য কেন্দ্র করেছি। টেলিমেডিসিন সেবাও পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।
হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান ডা. মহেশ গ্যাঙ্কা বলেন, বিশ্বে এখন ফ্যাটিলিভার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন এ রোগে আক্রান্ত। ভারতে ৫ কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত।
সংবাদ সম্মেলন দুটিতে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা অভিজিৎ মজুমদারসহ হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকরাও উপস্থিত ছিলেন।
]]>