১১ অক্টোবর ১০২ বিলাসবহুল গাড়ির দরপত্র উন্মুক্ত
<![CDATA[
মোংলা বন্দরে আমদানি করা রিকন্ডিশনড গাড়ি নিলামে তুলছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বন্দরের অভ্যন্তরে গাড়ি রাখার জায়গা খালি করা ও শুল্ক জটিলতা দূর করে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১০২টি রিকন্ডিশনড গাড়ি নিলামের দরপত্র জমা নেয়া হয়েছে। আগামী ১১ অক্টোবর সকাল ১০টায় সবার সামনে দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দরপত্র জমা নেয় মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন নিলামের অপেক্ষায় শেডে পড়ে থাকা প্রায় ১ হাজার ৫৩০টি গাড়ির মধ্য থেকে ১০২টি গাড়ি নিলামের দরপত্র জমা দিয়েছেন ক্রেতারা।
বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ ছাড়া ঢাকার সঙ্গে এ বন্দরের দূরত্ব কম ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে দেশি-বিদেশি গাড়ি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।
মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যবসায়ীদের আমদানি করা রিকন্ডিশনড গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করে তা জেটির ইয়ার্ড ও শেডে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়। এসব গাড়ি আমদানিকারকরা ৩০ দিনের মধ্যে বন্দর জেটি থেকে ছাড় করানোর নিয়ম থাকলেও ব্যবসায়ীরা তা করেননি। ফলে নিয়মানুযায়ী বিলাসবহুল রিকন্ডিশনড এ গাড়িগুলো বিক্রির জন্য নিলামের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
শুল্ক সংক্রান্ত কাগজপত্র ও আইনি জটিলতা শেষে নিলামের জন্য গত ২৯ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করে মোংলা কাস্টম হাউস। এর মধ্যে রয়েছে নিশান, টয়োটাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেডান, এসইউভি ও মাইক্রোবাস, ডাম্পট্রাক ও কংক্রিট মিক্সচার মেশিন ট্রাক। এ ছাড়া খালি গ্যাস সিলিন্ডারসহ ১১২টি লটের অনুকূলে আমদানি করা পণ্যও নিলামে তোলা হচ্ছে।
২ থেকে ৪ অক্টোবর সকাল ৮টার মধ্যে ই-অকশনের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে নিলামে অংশ নিয়েছে নিলাম ক্রেতারা। অনলাইনে অংশ নিতে দরপত্র কেনার প্রয়োজন নেই বলে জানায় কাস্টমস। তবে সিল করা টেন্ডারপত্রে গত ২ অক্টোবর পর্যন্ত ২০০ টাকা অফেরতযোগ্য দরপত্র কিনে অংশ নিয়েছে নিলাম ক্রেতা অনেকেই। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মোংলা, খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাখা টেন্ডার বাক্সে দরপত্র জমা দিয়েছেন।
আগামী ১১ অক্টোবর সকাল ১০টার সময় সবার সামনে ১০২টি নামি-দামি গাড়ি নিলামের জন্য জমা দেয়া দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। সর্বোচ্চ দরদাতাকে তাদের নিলামে ক্রয় করা গাড়ি পরবর্তী সময়ে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানায় মোংলা কাস্টমসের নিলাম শাখা কর্তৃপক্ষ।
মোংলা বন্দরের পণ্য আমদানিকারক ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরের দূরত্ব অনেক কমেছে, তাই গাড়ি আমদানিকারকরা মোংলা বন্দর দিয়ে আগের তুলনায় দ্বিগুণ গাড়ি আমদানি করছেন। ফলে সময় ও অর্থ দুই-ই সাশ্রয় হচ্ছে, যার কারণে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে বন্দরের রাজস্ব।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরের শেডে থাকা ১১৫টি রিকন্ডিশন গাড়ি নিলামে
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (সদস্য হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার বলেন, দেশে যত গাড়ি আমদানি হয় তার ৬০ ভাগ মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হচ্ছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান যদি সময়মতো গাড়িগুলো ছাড় করিয়ে নেয়, তাহলে বন্দরের অভ্যন্তরে নতুন করে গাড়ি রাখার জায়গা হবে, পাশাপাশি রাজস্বের সঙ্গে বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পাবে।
মোংলা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ মাহফুজ আহমদ বলেন, মোংলা কাস্টম হাউসের রাজস্ব আয়ের একটি বড় অংশ আসে গাড়ি আমদানির মাধ্যমে। তাই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তাদের আমদানি করা গাড়িগুলো সময়মতো ছাড় করিয়ে নিলে তারাও লাভবান হবে। সরকারের রাজস্বও সমৃদ্ধ হবে। দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের মোংলা বন্দর ব্যবহারের আহ্বান জানান মোংলা কাস্টমসের এ যুগ্ম কমিশনার।
গত অর্থবছর মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি হয় ২০ হাজার ৮০৮টি। আর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় পর জুলাই-আগস্ট এ দুই মাসে এ বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৩২৪টি।
]]>