রোদের আলোতেই ভিটামিন ডি’র ৯৫ শতাংশ পূরণ সম্ভব
<![CDATA[
হাত বাড়ালেই অফুরন্ত খাবার অথচ সেই খাদ্যাভাবে ভুগছে দেশের ৭০ শতাংশ নারী এবং ২২ শতাংশ শিশু। বলা হচ্ছে মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য এক উপাদান ভিটামিন ডি-এর কথা। শুধু রোদের আলো থেকেই ভিটামিনটির ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হলেও মানুষের মাঝে নেই তেমন কোনো সচেতনতা। ভিটামিনটির ঘাটতির কারণে হাড়ক্ষয়, ডায়াবেটিস, রিকেটস, অ্যাজমাসহ তৈরি হতে পারে একশটিরও বেশি রোগের জটিলতা।
সময় বেলা ১১টা, আলো ঝলমলে রোদ্দুর। মেঘ গলিয়ে গাছের পাতা ভেদ করে নেমে আসে ভূমিতে সব প্রাণিকূলের আশীর্বাদ হয়ে। চারদিকে যান্ত্রিক কোলাহল তার মাঝে একখণ্ড সবুজ, আর সেই সবুজের ফাঁকে উঁকি দেয়া রোদের চাদরে আসন পেতে বসেছেন সত্তোরোর্ধ ফাউজুল করিম। উদ্দেশ্য রৌদ্রস্নান।
ফাউজুল করিম বলেন, আমি সবসময় এই সময় এসে রোদ গায়ে লাগাই। কারণ, এই রোদটাই আমার জন্য উপকারী। এটি আমি দীর্ঘদিন ধরেই করছি।
জীবনের বড় একটি সময় নিয়ম করে রোদ গোসলে অভ্যস্ত ফাউজুলের আক্ষেপ বর্তমান শহুরে জীবনাচারণ নিয়ে। আক্ষেপ রোদ পলাতক, চার দেয়ালে বন্দি বর্তমান প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ভেবে।
ফাউজুল করিম আরও বলেন, তরুণ ছেলেরা তো রোদ দেখলে আড়াল হয়ে যায়। তাদের রোদটা দরকার, কিন্তু তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রকৃতি তাদের কাছে আসতে চায় কিন্তু তারা প্রকৃতির থেকে পালিয়ে বেড়ায়।
ভিটামিন ডি শরীরিক প্রয়োজনের পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার জন্যও খুবই প্রয়োজনীয় এক উপাদান হলেও এ নিয়ে দেখা গেছে সচেতনতার অভাব।
আরও পড়ুন: ভিটামিন ডি বেশি খেলে কী হয়?
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ভিটামিন ডি হলো ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড। যার কাজ অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। পাশাপাশি এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে।
ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হাড়ক্ষয়, ডায়াবেটিস, রিকেটস, অ্যাজমাসহ ১০০টিরও বেশি রোগের জটিলতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে এর প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) অর্থোপেডিক ও স্পাইন সার্জন সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এ জুনাইদ বলেন, অস্ট্রিওপোরোসিস এবং রিকেটস দুটিই খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাধি। সারা বিশ্বে প্রতি ৩ সেকেন্ডে একজন করে মানুষের হাড় ভেঙে যাচ্ছে শুধু অস্ট্রিওপোরোসিসের কারণে। এসবের ক্ষেত্রে চিকিৎসার চেয়ে আমরা যদি প্রতিরোধ করতে পারি এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা সূর্যের আলোও নেব আবার আমরা খাবারও নেব। রক্তে ভিটামিন-ডি এর পরিমাণ কত সেটা আমরা মাঝে মাঝে দেখে নেব। যদি দেখা যায় ডি-২ বেশি হয়ে যায় তাহলে কিন্তু ডি-৩ তে যেটা বেশি কার্যকর ভিটামিন সেটা কিন্তু কমে যায়। সেই জন্য আপনি অবশ্যই উদ্ভিদ থেকে ভিটামিন-ডি নেবেন কিন্তু বেশি নেবেন প্রাণিজ খাবার থেকে।
একজন মানুষের দেহে ভিটামিন ডি এর স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে ৩০ ন্যানোগ্রামস পার মিলিলিটারের বেশি। ২০ এর কম হলেই ধরা হয় স্বল্পতা। সূর্যের আলো ছাড়াও সামুদ্রিক মাছ, মাশরুম, দুধ, ডিম পনিরেও পাওয়া যায় ভিটামিন ডি।
]]>




