কুষ্টিয়ায় বাউলদের ওপর হামলা, আহত ৫
<![CDATA[
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের লাউবাড়িয়া এলাকায় এক লালনভক্তের বাড়িতে সমবেত হয়েছিলেন সাধুরা। এ সময় তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতরা দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
শনিবার (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লাউবাড়িয়া গ্রামের পলান মণ্ডল প্রতি বছর নিজ বাড়িতে ঘরোয়াভাবে সাধুসঙ্গের আয়োজন করেন। সাধুসঙ্গে বিভিন্ন এলাকার বাউল, সাধু, লালন ভক্ত ও অনুসারীরা যোগ দেন। গত শনিবারও বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়িটিতে হাজির হয়েছিলেন লালন ভক্তরা।
হামলায় গুরুতর আহত উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকার ফকির শফি বলেন, আমাদের যদি স্থানীয়রা কেউ নিষেধ করতো, তবে আমরা ওই বাড়িতে বসার আয়োজন ওই দিন করতাম না। এখন আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
লালন দর্শনের অনুসারী ফকির শফি জানান, ভক্ত পলানের বাড়িতে ফকির তাত্ত্বিক আলোচনার জন্য নতুন জায়গা করা হয়েছে। এটা তার বসতবাড়ির মধ্যেই। ঘটনার দিন বেশ কয়েকজনকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমরা সেখানে গিয়ে আমাদের রীতি অনুসারে সান্ধ্যকালীন কর্মসূচি পালন করি, এশার আজানের পর রীতি অনুসারে আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়। সেখানে কোনো মাইক বা সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা হয়নি। কোনো বাদ্যযন্ত্রও ছিল না, গান-বাজনাও হয়নি। এ ছাড়া সেখানে আয়োজন নিয়ে কেউ কোনো আপত্তিও করেনি।
আরও পড়ুন: কুড়াল দিয়ে ছেলের হাত কাটলেন, কাটা হাত নিয়ে থানায় বাবা!
তিনি বলেন, ঘটনার রতে হঠাৎ বাড়িটির চারপাশে কিছু লোক ঘিরে ফেলে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার পাশাপাশি বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। হামলাকারীরা মোট ১৫ থেকে ২০ জন ছিল। এ সময় তারা উপস্থিত সাধুদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। সেখানে নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু কাউকেই ছাড় দেয়া হয়নি।
বিষয়টি থানায় লিখিত জানানো পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারকেও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফকিরদের দাবি, অকারণে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে, তারা পালিয়ে বেঁচেছেন।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউল ইসলাম মহি জানান, গান-বাজনার জন্য এলাকার মুসল্লিদের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, উচ্চস্বরে গান-বাজনায় এইচএসএসি পরীক্ষার্থীদের সমস্যার কারণে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের কথা শুনেছিলাম। পরে সাধু-ফকিরদের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
]]>