জঙ্গি ছিনতাই মামলার আসামির আত্মসমর্পণ
<![CDATA[
পুরান ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় করা মামলায় ইদি আমিন নামে এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ আদেশ দেন।
রোববার (২৭ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) আশ্রাব আলী।
মামলায় ছিনতাই হওয়া দুই আসামিসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২১ জনকে আসামি করা হয়। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলার শুনানি শেষে কারাগারে থাকা ১২ জন আসামিকে হাজতখানায় নেয়ার পথে দুজনকে ছিনিয়ে নেয় সহযোগীরা। মামলায় ওই ১২ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় জামিন প্রাপ্ত দুজনকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া পলাতক আরও ৬ জনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: জঙ্গি ছিনতাই ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্য আজাদ বরখাস্ত
আসামিরা হলেন- শাহিন আলম, শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন বিএম মুজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারি, খাইরুল ইসলাম জামিল, মইনুল হাসান শামীম, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হোসেন সাইমন, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ, শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে যায়েদ, আব্দুস সবুর, রশিদ উন নবী ভূঁইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল, ইদি আমিন, মেহেদী হাসান অমি, সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান ওরফে মেজর জিয়া ওরফে বড় ভাই, আয়মান, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে কনিক, তানভীর ওরফে শামসেদ মিয়া, রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ও ওমর ফারুক ওরফে নোমান।
এদের মধ্যে ইদি আমিন রোববার আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন জানানো হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ইদি আমিনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর ঢাকার আদালত ফটকের সামনে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে জঙ্গি ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফিকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন আদালত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পক্ষ থেকে বলা হয়, আসামি মেহেদী হাসান জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। তিনি আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার সদস্য। তার বাড়ি সিলেটে। ব্লগার নাজিমউদ্দীন সামাদ হত্যার মিশনেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই নিছক দুর্ঘটনা: অ্যাটর্নি জেনারেল
ইতোমধ্যে ২১ নভেম্বর দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় করা মামলায় ১০ জনের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- শাহীন আলম ওরফে কামাল, শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন, বি এম মজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারী, আরাফাত রহমান, খাইরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হোসেন, শেখ আবদুল্লাহ, আবদুর সবুর ও রশিদ উন্নবী ভূঁইয়া। এই আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
গত ২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ফটকে পুলিশকে মারধর ও চোখে পিপার স্প্রে ছিটিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে ছিনিয়ে নিয়ে যান জঙ্গিরা। ছিনিয়ে নেয়া দুজন হলেন মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগ এলাকার আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর অফিসে ফয়সল আরেফিন দীপনকে ঘাড়ের পেছনে আঘাত করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
]]>