খেলা

শিক্ষার্থী ভর্তির লটারিতে এক নাম একাধিকবার

<![CDATA[

নেত্রকোনার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভর্তি লটারিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার এসেছে। এ নিয়ে জেলায় শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অভিভাবক মহলে চলছে নানা গুঞ্জন। শিক্ষকরাও বলতে পারছেন না ঠিক কী কারণে এমন জটিলতা।

নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী ছেলেদের আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় লটারিতে এক একজন শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার ওঠে আসে। এতে শিক্ষকরা পড়েছেন বিড়ম্বনায়।

আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, আবির আনোয়ার নামের এক শিক্ষার্থীর নাম ১১ ও ৬৬ সিরিয়ালে আসে। দুটিতেই মোবাইল নম্বর এক থাকলেও জন্ম সনদের দুটিতে শেষে ভিন্ন দুই নম্বর রয়েছে। তবে এটি জালিয়াতি কি-না এ ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হবে।

এদিকে ছেলেদের স্কুলে এক মেয়ে শিক্ষার্থীর নাম চলে আসায় মেয়েটি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়েও ভর্তি হতে পারবে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, মর্নিং শাখায় ১২০ জন এবং দিবা শাখায় ১১৯ জন শিক্ষার্থী ঠাঁই পেয়েছে।

আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত, যেভাবে জানবেন ফলাফল

তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ থেকে একটি আদেশ এসেছে। জালিয়াতি করে কেউ সুযোগ নিতে চাইলে তা বাতিল করা হবে। আর ভুলবশত হলে সেটি শুধরে নেয়া হবে।

আবিরের মা হাসনা আক্তার কাজল জানান, তিনি জানেন না কেমন করে তার ছেলের নাম দুবার এসেছে। জন্ম সনদের বিষয়েও তিনি কিছুই জানেন না।

এদিকে মোহনগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়েও দেখা গেছে, তালিকায় একাধিকবার নাম থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতিটি আবেদনে জন্ম নিবন্ধনও ভিন্ন ভিন্ন।

এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাও শুরু হয়। এদিকে ভর্তি তালিকায় নাম না আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একাধিক নাম থাকা শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা প্রতারণা করে একাধিক জন্ম নিবন্ধন করে তাদের নামে একাধিক আবেদন করেছেন বলেও অভিযোগ করেন।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত লটারির ভর্তি তালিকা প্রকাশ হতেই বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) এবং বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) শুরু হয় এক জনের তথ্য আরেকজনের মাধ্যমে যাচাই। ফেসবুকসহ সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার দুই শিফটে (মর্নিং ও ডে শিফট) মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে।

তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শোয়েব চৌধুরী নামে এক শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় ৩ বার রয়েছে। শিশুটির বাবার নাম স্বপন চৌধুরী হলেও অভিভাবকের মোবাইল নম্বর রয়েছে সেটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়েরই কম্পিউটার অপারেটর মাসুম রানার। শোয়েবের তিনটি আবেদনের বিপরীতে তিনটি আলাদা জন্ম নিবন্ধন নম্বর দেয়া আছে।

আরও পড়ুন: প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফল জানবেন যেভাবে

এ ছাড়াও ফাহমিন সৈয়দ বর্ণ ও আফরোজা আক্তার নামে দুই শিক্ষার্থীর নামও তালিকায় দুবার এসেছে। তাদের আবেদনেও একাধিক জন্ম নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর আবেদনে মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার মাসুম রানার মোবাইল নম্বর কীভাবে এলো এ বিষয়ে জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইলে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এদিকে তালিকায় একাধিকবার নাম থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেগুলোও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন অনলাইনে করেছে। লটারি হয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে। আমাদের হাতে এর নিয়ন্ত্রণ নেই। তালিকায় একজন শিক্ষার্থীর নাম একাধিকবার থাকলে সে ভর্তি একবারই হবে। ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়ে শূন্য জায়গা পূরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

কম্পিউটার অপারেটরের নম্বর কীভাবে গেল এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, এটি তাকে আমরা জিজ্ঞেস করেছি। সে নিজেও জানে না বলে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর বলেন, এতে আমাদের কিছু করার নেই। মন্ত্রণালয় থেকে লটারি হয়েছে। আবেদনকারী ভুল করতে পারে। অথবা ইচ্ছাকৃত করতে পারে এটি আমাদের বিষয় না।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!