বাংলাদেশ

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাকস্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করতে নয়: পলক

<![CDATA[

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন মূলত অপরাধীদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য, নারীদের অপমানজনক কথা বা কোনো কমেন্ট কেউ না দেয় সেটাকে প্রতিরোধ করার জন্য, কিন্তু কারও মুক্ত অধিকার বাকস্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য নয়।

সম্প্রতি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইয়াং বাংলা আয়োজিত তরুণদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠান ‘লেটস টক অন ডিজিটাল বিহেভিয়র ইন সাইবার স্পেস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জনসাধারণের মাঝে একটি ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করে যে জনসাধারণের বাকস্বাধীনতার প্রতিবন্ধক এই আইনটি। সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কী কী ভূমিকা পালন করছে?’ এক শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের মত প্রকাশের অধিকারকে কখনোই ডিজিটাল সিকিউরিটি দিয়ে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে না। স্বাধীনতা মানে এইটা না আরেকজনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ হলেন মা: পলক

তিনি আরও বলেন, আপনি এমন কোনো কথা বা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে করে অন্যজনের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়। আপনার মুক্ত স্বাধীনতা মানে এই নয় যে আপনি ফেসবুকে গিয়ে একজন নারী সম্পর্কে কটূক্তি করবেন কিংবা দেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ কোনো কথা বলবেন।

‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক নিউজের ছড়াছড়ি। আমরা কিভাবে বুঝবো কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা?’ এক শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নের জবাবে পলক বলেন, প্রথমে আমাদের ফেক নিউজ কথাটাই বলা বন্ধ করতে হবে, এটা আসলে কোনো নিউজ না, এটা কিন্তু ভুল তথ্য। আমরা যদি ফেক নিউজ বলি তাহলে কিন্তু মনে হচ্ছে এটা মিথ্যা সংবাদ, এটাকে আমরা প্রথমেই গ্রহণ করছি। আর আমরা যদি বলি এটা একটা মিথ্যা তথ্য, অপপ্রচার, গুজব তাহলে প্রথমে কিন্তু এটাকে সরিয়ে দেয়া যায়। কারণ এটা নিউ মিডিয়ার যুগ, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। কিন্তু নিউ মিডিয়া এবং নিউজ মিডিয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে।

তিনি আরও যোগ করেন, নিউজ আর ভুল তথ্যের মধ্যে পার্থক্য আছে। তাই আমাদের ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে প্রথমেই সচেতন হতে হবে যে, কোনটা নিউজ আর কোনটা ভুল তথ্য সেটা বুঝতে হবে। যেটা ভুল তথ্য সেটাকে ফেক নিউজ বলা যাবে না, সেটা সরাসরি গুজব। নিউজ মিডিয়া সরকার অনুমোদিত তাদের বিশ্বস্ত সূত্র আছে। আমরা সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের আগে ইন্টারনেটে যেন কোনো কিছু না করি সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক হতে হবে।

‘বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা সাইবার বুলিং এবং হ্যাকিংয়ের শিকার হই। এসব প্রতিরোধে সরকারের কোনো উদ্যোগ রয়েছে কি-না?’ আরেক শিক্ষার্থীর এমন প্রশ্নের জবাবে জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচ কোটি ২০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং সাড়ে ৫ কোটি টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী রয়েছেন। এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীরা বিভিন্ন সময় হ্যারেজমেন্টের শিকার হচ্ছে। সে কারণে ২০১৮ সালে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করি।

আরও পড়ুন: দেশের ৮৭ হাজার গ্রামে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন হবে: পলক

তিরি আরও উল্লেখ করেন, আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনায় ন্যাশনাল ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। আমরা একটা ওয়েবসাইট খুলেছি, সেখানে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেয়া আছে এবং একটি হেল্প লাইন কল সেন্টার চালু করেছি। ৩৩৩ নম্বরে কল দিয়ে সাইবার সিকিউরিটি সংক্রান্ত, সাইবার বুলিং সংক্রান্ত যেকোনো ধরনের পরামর্শ এবং আইনগত সহায়তা পাওয়া যাবে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত তরুণদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠান ‘লেটস টক অন ডিজিটাল বিহেভিয়র ইন সাইবার স্পেস’ বিষয়ক আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অর্থ মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির  সদস্য রুমানা আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুন-অর-রশীদ, বরিশাল ইয়ুথ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক ফায়েজ বেলাল।

 

 

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!