আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ৩ ফ্যাক্টর
<![CDATA[
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের জন্য প্রস্তুত আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। শিরোপা জেতা কারও জন্যই সহজ হবে না। বলা হয় ফুটবল মাঠের পাশাপাশি দুই কোচের মনস্তাত্তিক আর স্ট্র্যাটেজিকাল দ্বৈরথও। বিশ্বকাপের ফাইনালে তাই স্পটলাইটের পুরোটাই দুই মাস্টারমাইন্ড দিদিয়ের দেশম আর লিওনেল স্ক্যালোনিতে। এই ম্যাচের নির্ণায়ক হতে পরে মাঠের তিনটি লড়াই।
মরুর উত্তাপ বাড়াচ্ছে বিশ্বকাপ ফাইনাল। দোহায় রোববার (১৮ ডিসেম্বর) মুখোমুখি লাতিন ও ইউরোপের দুই পরাশক্তি আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। লুসাইল স্টেডিয়ামের হাইভোল্টেজ লড়াই উপভোগে উন্মুখ হয়ে আছে দর্শকরা। শিরোপা জিতে বিদায় নেবেন লিওনেল মেসি, স্বপ্ন আলবিসেলেস্তেদের। অন্যদিকে এমবাপে জাদুতে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা ফরাসিদের।
আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ে বড় বাধা হতে পারেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ম্যাচের মোড় একাই ঘুরিয়ে দিতে পারেন এই স্ট্রাইকার। যদিও আলবিসেলেস্তে কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি শুধু এমবাপ্পে নন, পুরো ফ্রান্স দল নিয়েই চিন্তিত।
আর ফরাসিরা মাঠে নামতে পারে নতুন ফরমেশনে। ইনজুরির সমস্যা নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে আসা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে। তাদের সামনে সুযোগ, দীর্ঘ ৬০ বছর আগের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করা। ইতালি ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে টানা দুই বিশ্বকাপ জেতা। সে উদ্দেশ্যে ফাইনালে ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম সেরা পরিকল্পনাই সাজাবেন।
আরও পড়ুন: গ্রামবাসীর গৌরব ‘স্পাইডার’ আলভারেজ
বিশ্বকাপে নিজের শেষ ম্যাচে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারলে বিতর্কের ঊর্ধ্বে গিয়ে সর্বকালের সেরা হওয়ার হাতছানি লিওনেল মেসির সামনে। অন্যদিকে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই পরপর দুটি বিশ্বকাপ জিতে পেলের রেকর্ডে ভাগ বসানোর সুযোগ এমবাপ্পের সামনে। এই দুজনই হতে পারেন বিশ্বকাপ ফাইনালের মূল ফ্যাক্টর। তাদের ঘিরেই বেশি ভয় দুই শিবিরে! ভয় রয়েছে আরও কয়েকটি পজিশন নিয়েও। সেজন্য কী পরিকল্পনা করতে পারেন স্ক্যালোনি-দেশম?
এমবাপ্পে-মোলিনা
ফরাসি তরুণ এমবাপ্পেকে আটকে রাখার মতো ফুটবলার রয়েছে স্ক্যালোনির হাতে। বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে আটকাতে নাহুয়েল মোলিনাকে দায়িত্ব দিতে পারেন আর্জেন্টাইন কোচ। অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের এই রাইট ব্যাক গোটা মৌসুমে তেমন খেলতে না পারলেও কাতারে রয়েছেন চেনা ছন্দে। আর টটেনহ্যামের সেন্টার ব্যাক ক্রিস্টিয়ান রোমেরোকে দিতে পারেন এমবাপ্পেকে জোনাল মার্কিংয়ের দায়িত্ব। যদিও এমবাপ্পের সঙ্গে মূল লড়াই হবে মোলিনার।
আরও পড়ুন: আবেগঘন চিঠিতে কী লিখলেন মেসির স্কুলশিক্ষক
মেসি-চুয়ামেনি
আর্জেন্টিনার জন্য এমবাপ্পে যেমন বড় চিন্তার কারণ, তেমনই ফ্রান্সের বড় চিন্তা লিওনেল মেসি। কাতার বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে আছেন ৭ বারের ব্যালন ডি’ অর জয়ী তারকা। কড়া মার্কিং করেও আর্জেন্টিনার খুদে জাদুকরকে আটকাতে পারছে না কেউ। ফাইনাল ম্যাচে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে আটকাতে মিডফিল্ডার অরেলিয়ান চুয়ামেনিকে ব্যবহার করতে পারেন দিদিয়ের দেশম। গত বছর পিএসজি-মোনাকো ম্যাচে মেসিকে আটকানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে চুয়ামেনির। যদিও তেমন সাফল্য পাননি। ফ্রেঞ্চ লিগের সেই ম্যাচে মেসি নিজে একটি গোল করেন এবং একটি গোল করান এমবাপ্পেকে দিয়ে। তবে চলতি মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার পর চুয়ামেনির খেলা অনেকটাই বদলে গেছে। বেশ ভালো ছন্দে রয়েছেন তিনি। চুয়ামেনি মেসিকে আটকে রাখতে পারলে ফাইনালের লড়াইয়ে অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় থাকবে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
গ্রিজম্যান-ফার্নান্ডেজ
মাঝমাঠ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে দল মাঝমাঠের দখল নিতে পারে, তাদের জয়ের সম্ভাবনাও থাকে বেশি। এ লড়াইয়ে নেতৃত্বে দেবেন ফ্রান্সের পক্ষে আঁতোয়ান গ্রিজম্যান এবং আর্জেন্টিনার পক্ষে এনসো ফের্নান্দেজ। দু’দলের দুই মিডফিল্ডারই রয়েছেন ভালো ছন্দে। গ্রিজম্যান যেমন ফ্রান্সের আক্রমণ তৈরির অন্যতম কারিগর তেমন আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের ভরসা ফার্নান্ডেজ। মাস ছয়েক আগেও আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক হয়নি তার। অথচ এর মধ্যেই তিনি আর্জেন্টিনা কোচের পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছেন। মাঝমাঠের এই দুই তারকা ফুটবলারের পারফরম্যান্সের ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে শিরোপা ভাগ্য।
]]>