কিশোরগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে কলা চাষ অনেক কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন
আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের কৃষকরা পরিত্যক্ত অনাবাদি বালুময় জমি বাড়ির আনাচে-কানাচে পুকুর পাড়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছেন কলা চাষ। এ ফসল চাষ করে অনেক কৃষক এনেছেন তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন। কৃষকরা বলছেন, কলা চাষ একটি লাভজনক ফসল। এ ফসলে খরচ কম তবে লাভ বেশি। কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত, খনার এ বচনে শুধু ভাত কাপড়ই নয়, এ জনপদের পিছিয়ে পড়া গ্রামগুলোর সেই ছনের নিচু ঘরগুলো উঁচু হয়ে উঠেছে ইট, পাথরের দেয়াল আর টিনের চালে। আর ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়ে। গ্রামীণ মেঠো পথের রাস্তার পাশে সারি সারি কলার গাছে ঝুলছে কলার কাঁদি। উপজেলার চাঁদখানা ইউপি’র নগরবন গ্রামের কলাচাষি মিজান জানান, গত বছর ৩বিঘা জমিতে মেহের সাগর, দেশী মালভোগের ৭৫০টি কলার চারা রোপন করে ৫০হাজার টাকা খরচ করে ৯/১০মাস পর প্রথম কাটায় কলা বিক্রি করেন, ১লাখ ৩০হাজার টাকা। যা খরচ বাদে ৮০হাজার টাকা লাভ হয়েছে। একবার রোপণ করা কলা গাছ থেকে পর্যাক্রমে নতুন করে গজানো চারা গাছ পরিচর্যা করে ৪/৫বছর ফলন পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ে বেশি লাভ, তৃতীয় পর্যায়ে আরো বেশি লাভ। তুলনামূলক অন্য ফসলের চেয়ে কলা চাষে লাভ বেশি।
দ্বিতীয় কাটায় বিশেষ করে এবছর ২লাখেরও অধিক টাকা লাভের স্বপ্ন বুনছেন তিনি। একই ইউপি’র চাঁদখানা চার মাথার মোড়ের কলা চাষে সফল কৃষক দুলাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে ৪বিঘা জমিতে কলা চাষে তার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। বাহাগিলী ইউপি’র উঃ দুরাকুটি গ্রামের আব্দুল জব্বার, তিনিও বিগত কয়েক বছর ধরে কলা চাষ করে ভালোই লাভবান হয়েছেন। তিনি জানান, কলা চাষে তেমন ঝুঁকি নেই, সঠিক সময়ে পরিচর্যা করলে কলার ভালো ফলন পাওয়া যায়। নিতাই বেলতলি কাচারী পাড়ার কৃষক সিরাজুল জানান, অন্য ফসলের চাষ না করে বিগত ১০বছর ধরে ৫বিঘা জমিতে কলার চাষ করছেন।
১বিঘা (৩০শতাংশ) জমিতে ১৫/২০হাজার টাকা খরচ করে কলা বিক্রি করে আয় হয় ৮০হাজার টাকা। যা খরচ বাদে লাভ হয় ৬০/৬৫ হাজার টাকা। প্রতি বছর ৫বিঘা জমির কলাতে আয় হয় ৩লাখ টাকার মত। আর কলা বিক্রিতেও তেমন ঝুট ঝামেলা নেই। বিভিন্ন প্রান্তরের ব্যবসায়ীগন বাগান থেকে কলা ক্রয় করে নিয়ে যান। এখন তিনি খনার বচনের মর্মকথায় ভাত-কাপড়ের পাশাপাশি জমি, পাকা বাড়ি, গাড়ির মালিক।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, চলতি বছর ১৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষের লক্ষ মাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে কলা বাম্পার ফলন হয়েছে।অনেক কলা চাষি এফসল চাষাবাদ ভাগ্যের পরিবর্তন এনেছেন।