বাংলাদেশ

সংগ্রাম-স্বাধীনতা-অর্জনে আওয়ামী লীগ

<![CDATA[

বাঙালির ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার-স্বাধীনতা কিংবা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক লড়াই–বাঙালির সব আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দেশের নানা অর্জন আর সাফল্যও ধরা দিয়েছে দলটির হাত ধরে।

২২তম জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাসের চুম্বক অংশ সময় সংবাদের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–

জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামের নতুন রাষ্ট্রের জন্ম আর তার অন্তর্ভুক্ত পূর্ববঙ্গ। নতুন রাষ্ট্রের যাত্রালগ্নেই মৌলিক ও আদর্শিক নানা দ্বন্দ্ব দেখা দেয় ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা মুসলিম লীগের মধ্যে। দলীয় সংকীর্ণ স্বার্থ ও কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয় মুসলিম লীগের উদারপন্থি ও তরুণদের বড় একটি অংশ।

২৩ জুন ১৯৪৯। পাকিস্তান জন্মের দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে মুসলিম লীগ ভেঙে জন্ম নেয় আওয়ামী মুসলিম লীগের। পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠিত দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন কারাবন্দি শেখ মুজিবুর রহমান। আর এ দলটিই হয়ে ওঠে পূর্ববঙ্গে শক্তিশালী বিরোধী প্ল্যাটফর্ম, গণমানুষের অধিকার আদায়ের প্রধান ঠিকানা।

 

প্রতিষ্ঠার পরই পূর্ব বাংলার আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন গণমুখী দাবিতে সরব হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ভূমিধস জয়ে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক আধিপত্য ও মজবুত জনভিত্তি। আর দলের প্রগতিশীলতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার পথে বড় পদক্ষেপ ছিল ১৯৫৫ সালে মুসলিম শব্দ বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামকরণ।

আরও পড়ুন : আ. লীগের সম্মেলনে যুক্ত হলো থিম সং

নানা চড়াই-উতরাই পেরোনো আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ আসে, ১৯৫৭ সালে দলত্যাগ করে মওলানা ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন। তবে এ ধাক্কার পর দলের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে যায় শেখ মুজিবের কবজায়। আর ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারির পর আওয়ামী লীগকে পড়তে হয় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে। বৈষম্যের শিকার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য ১৯৬৬ সালে বাঙালির মুক্তির সনদখ্যাত ছয় দফা ঘোষণা করেন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রধান মুখ শেখ মুজিব। ধীরে ধীরে ছয় দফার পক্ষে গড়ে ওঠে ব্যাপক জনমত।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবকে প্রশ্নবিদ্ধ বিচারের মুখোমুখি করা হলেও থেমে থাকেনি ছাত্র-জনতার আন্দোলন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে মুক্তি পান শেখ মুজিব। জনসমুদ্রে ভূষিত হন ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে। সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ।

কিন্তু জনগণের প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের টালবাহানায় ক্রমেই জটিল হতে থাকে পরিস্থিতি। কিন্তু ক্ষমতা না পেলেও সবকিছুই চলতে থাকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে, একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ডাক দেন স্বাধীনতা সংগ্রামের।

২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার মধ্যে বন্দি হন বঙ্গবন্ধু। এর আগে দিয়ে যান স্বাধীনতার ঘোষণা। ১৭ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে দেশের প্রথম মুজিবনগর সরকার গঠন করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। নেতৃত্ব দেন নয় মাসের রক্ষক্তয়ী মুক্তিসংগ্রামে বিজয় অর্জনে।

আরও পড়ুন : আ. লীগের সম্মেলনে অংশ নিতে জয়কে কাদেরের আমন্ত্রণ

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের বন্দিশালা থেকে ফিরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে বহুমুখী পদক্ষেপ নেন বঙ্গবন্ধু। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থমকে দেয় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বদলে যায় রাজনীতির গতিপথ। বহুধাবিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যের সুতোয় গাঁথতে সভাপতি নির্বাচিত করা হয় নির্বাসিত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে হাল ধরেন দলের, নেতৃত্ব দেন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে।

দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের গঠিত হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০০১ সালে ক্ষমতার পালাবদল আর এক-এগারোর অভিঘাত পেরিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভূমিধস জয় পায় আওয়ামী লীগ।

এরপর থেকে টানা ১৪ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে আওয়ামী লীগ। ইতিহাসের নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরোনো আর সংগ্রাম-অর্জনের গৌরবময় নেতৃত্বের অধিকারী দলটির নেতা নির্বাচনে শনিবার ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হবেন নেতাকর্মীরা।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!