মেক্সিকো সফরে বাইডেন
<![CDATA[
মেক্সিকো সফরে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। উত্তর আমেরিকার নেতাদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে এ সফর করছেন তিনি। সফরে তিনি মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরর সঙ্গে আঞ্চলিক অভিবাসন ও মাদক সমস্যা নিয়ে আলাপ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এএফপির প্রতিবেদন মতে, রোববার (৮ জানুয়ারির) মেক্সিকোর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন বাইডেন। পথিমধ্যে তিনি টেক্সাস রাজ্যের এল পাসো সিটিতে যাত্রাবিরতী নেন ও সীমান্ত পরিদর্শনে যান। এল পাসো শহরটি মেক্সিকো সীমান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরগুলোর মধ্যে একটি ও মেক্সিকোর সিউদাদ জুয়ারেজের সঙ্গে সংযুক্ত। এ শহর দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।
সীমান্ত পরিদর্শন শেষে মেক্সিকোয় যান বাইডেন। মেক্সিকোর রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে নবনির্মিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ফেলিপ অ্যাঞ্জেলেসে তাকে স্বাগত জানান মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাদর। তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড পরিমাণ ফেন্টানিল জব্দ
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এটি বাইডেনের প্রথম মেক্সিকো সফর। তার এ সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো মেক্সিকো সীমান্ত ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক অনুপ্রেবেশ বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। সোমবার (৯ জানুয়ারি) ও মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) লোপেজ অব্রাদর ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে পৃথক পৃথক বৈঠক করবেন। এরপর তিনজন একসাথে বৈঠক করবেন বাইডেন।
তিন রাষ্ট্রপ্রধানের এ বৈঠককে ‘তিন বন্ধুর’ সম্মেলন হিসেবেও অভিহিত করা হয়। বৈঠকে বাণিজ্য ও পরিবেশ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করার কথা থাকলেও বাইডেন মূলত অনিয়মিত অভিবাসন ও বিপদজনক মাদক পাচারের ওপর গুরুত্ব দেবেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার কিউবান, নিকারাগুয়ান, হাইতিয়ান ও ভেনিজুয়েলান নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে। যদি তারা তাদের নিজ দেশ থেকে আবেদন করে, জীবনবৃত্তান্ত ঠিক থাকে ও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের আর্থিক সমর্থনের প্রমাণ থাকে, তাহলে তাদের দুই বছর পর্যন্ত বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসায় বাইডেন
তবে বাইডেন বলেছেন, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলে তাদের মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানো হবে। মহামারি-যুগের অভিবাসন নীতিকে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করা অভিবাসীদের বাইরে রাখার কারণ হিসাবে উল্লেখ করে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সীমান্ত নিরাপত্তার প্রতি নমনীয় মনোভাবের অভিযোগ তুলে রিপাবলিকানরা দীর্ঘদিন ধরে বাইডেনের সমালোচনা করে আসছে। এই সফরের আগে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাইডেন তার দুই বছরের শাসনকালের সীমান্ত নিরাপত্তার কাজ মূল্যায়ন করবেন।
এতে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যারা চারটি দেশে ‘রাজনৈতিক নিপীড়ন ও দলবদ্ধ সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা অভিবাসীদের ঐতিহাসিক সংখ্যার’ আগমন নিয়ে কাজ করছেন।
শুধুমাত্র মধ্য আমেরিকার দেশগুলো থেকেই নয়, হাজার হাজার অনিবন্ধিত অভিবাসী অন্যান্য জায়গা থেকেও আসছে। যা সীমান্ত কর্মকর্তাদের হতবিহবল করে তুলেছে। অভিবাসীদের মধ্যে অনেককে প্রশাসনিকভাবে সীমান্তে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। তাদের আশ্রয়ের অনুরোধগুলো বিবেচনা করার জন্য পরে আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। বাকিদের সীমান্তে ফেরত পাঠানো হয় ।
সব মিলিয়ে গত সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে ২৩ লাখ ৮০ হাজার অভিবাসীর আগমন নথিভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রথম বার্ষিক সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এল পাসো মেক্সিকো সীমান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার অভিবাসী আসে।
]]>