কী আছে বাইডেনের গোপন নথিতে
<![CDATA[
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক সময়ের ব্যক্তিগত অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া নথিগুলো মূলত ইউক্রেন, ইরান ও যুক্তরাজ্য সম্পর্কিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন। যে ১০টি গোপন নথি উদ্ধার করা হয়েছে, তার মধ্যে বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ওই তিনটি দেশের বিভিন্ন বিষয়ে কিছু গোয়েন্দা মেমো ও বক্তব্য-বিবৃতিমূলক নথি রয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ এসব তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
এদিকে নিজের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া ওই নথিগুলো নিয়ে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেছেন, তার এক সময়কার ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে যেসব গোপন নথি উদ্ধারের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোতে আসলে কী আছে, তা তিনি জানেন না। মেক্সিকো সফরকালে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) এক সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন তিনি।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট (মেয়াদে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাইডেন। আইন অনুযায়ী, সরকারি চাকরি শেষ হলে কেন্দ্রীয় সরকারে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায় দাফতরিক নথি ও গোপন দলিলপত্র জমা দিয়ে দিতে হয়।
তবে বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালের কিছু গোপন সরকারি নথি তার একটি ব্যক্তিগত অফিসে পাওয়া গেছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন মতে, নথিগুলো পাওয়া যায় ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক ইউনিভার্সিপি অব পেনসিলভানিয়ার ‘বাইডেন সেন্টার ফর ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড গ্লোবাল এনগেজমেন্ট’র অফিসে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি প্রফেসর ছিলেন বাইডেন।
আরও পড়ুন: গ্যাসের চুলা নিষিদ্ধের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
সিএনএন জানিয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড নথিগুলো তদন্তের একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন। এখন বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ফৌজদারি তদন্ত করা হবে কিনা, করা হলে কীভাবে এগোতে হবে সেসব বিষয়ে তা বিবেচনা করছেন তিনি।
সূত্র মতে, গোপন নথিগুলো ২০১৩ ও ২০১৬ সালের সময়কার। এগুলো তিন বা চারটি বাক্সে পাওয়া গেছে যার মধ্যে ওই অফিসের স্বাধারণ কাগজপত্র রয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল রেকর্ডস অ্যাক্টস’ আইনের অধীনে পড়ে। নথিগুলোতে ইউক্রেন, ইরান ও যুক্তরাজ্য সম্পর্কিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন রয়েছে বলে সিএনএনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
নথিগুলো গত নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে পাওয়া গেলেও গত সোমবার (৯ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়। বাইডেনের বিশেষ উপদেষ্টা রিচার্ড সাউবের জানান, অফিস পরিষ্কার করার সময় প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা নথিগুলো পান। এসব নথি জাতীয় আর্কাইভের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জাতীয় আর্কাইভ এ ধরনের নথিগুলো সামলানোর কাজ করে থাকে।
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় শীতকালীন ঝড়ে মৃত্যু বেড়ে ১৬, জরুরি অবস্থা জারি
মঙ্গলবার এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘গোপন নথি, গোপন তথ্যের বিষয়গুলো যে আমি গুরুত্বের সঙ্গে দেখি, তা জনগণ জানে। নথিগুলো পাওয়ার তথ্য আমাকে জানানো হয়েছে। ওই অফিসে সরকারি কোনো নথি নেওয়া হয়েছে—এমনটা জানতে পেরে আমি বিস্মিত হয়েছি। তবে আমি জানি না, ওই সব নথিতে কী আছে। আমরা নথিগুলো পর্যালোচনার কাজে পুরোপুরি সহযোগিতা করছি।’
বাইডেনের আশা, শিগগিরই পর্যালোচনার কাজ শেষ হবে। সোমবার বাইডেনের বিশেষ উপদেষ্টা রিচার্ড সাউবের বলেছেন, পেন বাইডেন সেন্টারের একটি তালাবদ্ধ আলমারি থেকে পাওয়া নথিগুলোর মধ্যে অল্প কয়েকটিতে ‘গোপনীয়তা’-এর চিহ্ন ছিল। পেন বাইডেন সেন্টার হলো পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান।
এমন সময় এসব নথি পাওয়ার ঘটনা ঘটল, যখন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে সরকারি গোপনীয় নথি পাওয়ার বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্তের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্ত কর্মকর্তারা ট্রাম্পের কাছ থেকে কমপক্ষে ৩২৫টি গোপনীয় সরকারি নথি উদ্ধার করেছেন।
]]>