মোংলা বন্দরে রুশ জাহাজের বিধিনিষেধের সেই চিঠি
<![CDATA[
রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে ঢুকতে আরও ৬৯টি বাণিজ্যিক জাহাজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে একটি জাহাজের খবর দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছে। ‘স্পার্টা-৩’ ওরফে ‘উরসা মেজর’ নামের জাহাজটি গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী বোঝাই করে মোংলা বন্দরে ভেড়ার অপেক্ষায় ছিল। এর আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজ।
এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরে বিষয়টি যাচাই করে ওই জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে দেয়। এরপর জাহাজটি পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে গিয়ে সরঞ্জাম খালাসের চেষ্টা করে। কিন্তু নয়াদিল্লির অনুমতি পেতে ব্যর্থ হয়ে পণ্য খালাস করতে না পেরে ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায় বাণিজ্যিক ওই জাহাজটি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়ার আরও ৬৯টি বাণিজ্যিক জাহাজ মোংলা বন্দরে পণ্য নিয়ে আসতে পারছে না। বিশ্বের শিপিং সংস্থার সাতটি কোম্পানির এসব জাহাজকে বন্দরে প্রবেশ, নিবন্ধন ও জাহাজ বাঙ্কারিং (তেল সরবরাহ), শ্রেণিকরণ, সনদায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, পুনঃসরবরাহ, রিফুয়েলিং, বীমা এবং অন্য সামুদ্রিক পরিসেবা নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ পতাকা রেজিস্ট্রেশনকারী সংস্থা কর্তৃক জাহাজ সমূহের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী যেকোনো ধরণের রেজিস্ট্রেশন প্রদান না করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে মোংলা বন্দরকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুরের সরঞ্জাম খালাসে ‘ব্যর্থ’ রুশ জাহাজ, ছেড়েছে ভারতীয় জলসীমা
গত ৫ জানুয়ারি উপসচিব এস এম মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই নিষেধাজ্ঞার তথ্য বন্দরকে অবহিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞার সেই চিঠি এরইমধ্যে সংবাদকর্মীদের কাছে পৌঁছায়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ, মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী কয়েকজন শ্রমিক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চিঠিতে নিষেধাজ্ঞার উল্লেখিত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আসা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের এই চিঠিতে আমেরিকার শিপিং সংস্থার নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী সাতটি কোম্পানি ও ৬৯টি জাহাজের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরইমধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে ৬৯টি জাহাজের তালিকা বন্দর সংশ্লিষ্ট এজেন্ট ও ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠিয়ে এসব জাহাজ যাতে মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: তিন দিনের ব্যবধানে মোংলা বন্দরে মেগা প্রকল্পের ৫ বিদেশি জাহাজ
‘যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য জাহাজগুলো হচ্ছে-এম ভি স্পার্টা-১, স্পার্টা-২, বেলোমোরস্কাই, সিজহোবকা, ডিভিনস্কাই জালিভ, ইনযিনার টারবিন, ইনযিনার ভেসনিয়াকব, আইহোহান মাহমাসতাল, ক্যাপ্টেন কোকোভিন, রাইনসিন, মেখানিক আরভেস, মিকালইল লোমোনোসোভ, এস কুজনিসোভ, সাইয়ানি সেভারা, এস এমপি নোভোডিভিনেস্ক ও এস এমপি সেভারোডিভিনেস্ক।’
রাশিয়ার এসব জাহাজে মেশিনারিজ পণ্য আনার কথা ছিল বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী মেসার্স নুরু অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী এইচ এম দুলাল বলেন, নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজের তালিকা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে হাতে পেয়েছি। আগে থেকে অবহিত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তা নাহলে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হতো।
]]>