প্রাইভেটকারের ওপর যেভাবে পড়ল গার্ডারটি
রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ফ্লাইওভারের একটি গার্ডার পড়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। প্রাইভেটকারে থাকা সাত আরোহীর মধ্যে শুধু বেঁচে রয়েছেন নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া মনি। সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
রাতে এই চাঞ্চল্য দুর্ঘটনার একটি সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া গেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের কাজ করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনি দেখা যায়নি। ভিডিওতে দেখা যায়, ভারী গার্ডারটি ক্রেনে ওঠানোর সময়, ক্রেনটি গার্ডারের ভার বইতে না না পেরে অর্ধেক উল্টে যায়। এ সময় ওই রাস্তা দিয়ে গাজীপুরের দিকে যাচ্ছিল চাপাপড়া প্রাইভেটকারটি। গার্ডারটি পড়ে মুহূর্তেই চ্যাপ্টা হয়ে যায় প্রাইভেটকারটি।
হতাহতদের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৌভাতের দাওয়াত খেয়ে স্বজনরা নবদম্পতিকে নিয়ে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে উত্তরার জসীম উদ্দীন মোড় সংলগ্ন সড়কে বিআরটির প্রকল্পের গার্ডার পড়ে তাদের বহনকারী প্রাইভেটকারের ওপর। প্রাইভেটকারে সাত আরোহীর মধ্যে শুধু বেঁচে যান হৃদয় (২৫) ও রিয়া মনি। গত শনিবার (১৩ আগস্ট) বিয়ে হয় তাদের।
প্রাইভেটকারে আরোহীদের মধ্যে ছিলেন হৃদয়ের বাবা রুবেল (৬০), হৃদয়ের শাশুড়ি ফাহিমা (৪০), রিয়া মনির খালা ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হৃদয় ও রিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বজনরা জানান, গত শনিবার হৃদয় ও রিয়ার বিয়ে হয়। তারা আজ ছেলের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। হৃদয়ের পরিবার দক্ষিণখান থানার কাওলা আফিল মেম্বারের বাড়ির ভাড়াটিয়া। আর কনে রিয়া মনির বাড়ি আশুলিয়ার খেজুর বাগানে আসরাফউদ্দিন চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায়।
হৃদয়ের চাচাতো ভাই রাকিব জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা দুর্ঘটনার খবর পান। প্রায় তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে গাড়ি থেকে মরদেহগুলো বের করে উদ্ধারকারীরা।
রাকিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার কীভাবে এ অব্যবস্থাপনার মধ্যে কাজ করছে? আমরা কার কাছে বিচার দেব! আমাদের অন্তত লাশগুলো বের করে দিক। কিন্তু এখানে তো কোনো উন্নত যন্ত্রপাতি নেই।
এর আগে গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে একই প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হন।