Gopalganj (গোপালগঞ্জ)

গাড়িবহরে হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নিহত

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি।

গোপালগঞ্জে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে বাধা দেওয়ায় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গাড়ি ভাঙচুর ও দোকানপাটে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শওকত হোসেন দিদার (৩৮) নামের কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানীসহ আরও অন্তত ৩০ জন।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতদেরকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের বেগগ্রাম এলাকায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রফিক উজ্জামানের সভাপতিত্বে পথসভা শেষ করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানী, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্মসম্পাদক তৌহিদুর রহমান তাজসহ কেন্দ্রীয় নেতারা গাড়িবহর নিয়ে সেখান থেকে রওনা হন টুঙ্গীপাড়ায় জনসভার উদ্দেশে।

পথে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ঘোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছলে একদল জনতা লাঠি নিয়ে তাদের বাধা দেয়। পরে গাড়িবহরের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নেমে বাধাদানকারীদের ধাওয়া দেয়।

এক পর্যায়ে স্থানীয় দোকান মালিকসহ সাধারণ জনগণ তাদেরকে লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে পালটা ধাওয়া করে। এসময় তারা বিএনপি নেতাদের গাড়িবহরে হামলা করে এবং অন্তত ১৫টি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে এবং বিএনপির নেতাদেরসহ গাড়িবহরের স্থানীয় নেতাকর্মীদেরকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে।

এ সময় এসএম জিলানী, তার স্ত্রী রওশন আর রন্তা ও সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা ও স্থানীয় নেতারাসহ অন্তত ৩০ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। আহত হন সময় টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান এইচএম মানিক।

এক পর্যায়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে শুরু হয় প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি। টানা ঝড়বৃষ্টির কারণে এক পর্যায়ে সংঘর্ষ থেমে যায়। পরে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দোলা পেট্রোল পাম্প এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত হোসেন দিদারের (৩৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান শওকত হোসেন দিদারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের পর তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এদিকে, আহত অবস্থায় এসএম জিলানী ও সেলিমুজ্জামান সেলিম সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতা হাসানুল বান্না, যুবদল নেতা রাজীব বিশ্বাস, ছাত্রদল নেতা ইমরুল মিয়া ও শ্রমিকদল নেতা মো. আব্দুল্লাহ শেখসহ বেশ কয়েকজন গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিন দুপুরে এসএম জিলানী ও সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ আসার পথে মুকসুদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক পথসভা করে। পরে তারা সেখান থেকে এসএম জিলানীর নিজ এলাকা টুঙ্গীপাড়া জনসভার উদ্দেশে রওনা হন। পথে গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম এলাকায় তারা পথসভায় যোগ দেন।

 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!