খেলা

সত্যিই কি মানুষ চাঁদে গিয়েছিল?

<![CDATA[

১৯৬৯ সালে প্রথমবারের মতো চাঁদে পা রাখে মানুষ। যা বিজ্ঞানের বড় এক অর্জন, মানব সভ্যতার বিশাল এক সাফল্য হিসেবেই দাবি অভিযান সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু অভিযানের পর থেকেই নানা রকম যুক্তি এবং প্রশ্ন তুলে অনেকেরই দাবি, চাঁদে মানুষ যায়নি, এটি সম্পূর্ণই সাজানো নাটক!

বিতর্কের শুরুটা মূলত ১৯৭৬ সালে জার্নালিস্ট ‘বিল কেসিং’ এর লেখা ‘উই নেভার ওয়েন্ট টু দ্য মুন’- বইয়ের মাধ্যমে। তিনি কাজ করতেন নাসার একটি ঠিকাদার কোম্পানির জনসংযোগ বিভাগে। তার বইয়ের মূল বিষয় ছিল, ‘মানুষ কখনো চাঁদে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসলে তিন হাজার কোটি ডলারের প্রতারণা করা হয়েছে।’

এদিকে এ অভিযানকে অবিশ্বাস করে, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে- চাঁদে তো বাতাস নেই, তাহলে সেখানের তোলা ছবিতে মার্কিন পতাকা উড়ছে কী করে? শুধু তাই নয়, তারা আরেকটি প্রশ্ন তুলেছেন, প্রকাশিত ছবিতে চাঁদের আকাশে তারামণ্ডল দেখা যাচ্ছে না কেন?

আরও পড়ুনঃ বুকে কষ্ট নিয়ে মুখে হাসি ‍ফুটিয়েছেন চার্লি চ্যাপলিন

ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির  জ্যোতির্বিজ্ঞানী পল ডিলেনির মতে, বাতাস না থাকায় পতাকাটি দাঁড়ানো স্ট্যান্ডের সাথে একটি অনুভূমিক স্টিক ব্যবহার করে ঝুলানো হয়েছে৷ যার দরুন একটু কুঁচকে থাকার ফলে ছবিটি দেখতে মনে হয়, যেন পতাকাটি উড়ছে৷ তবে সত্যিই যদি পতাকাটি বাতাসে উড়তো, তাহলে অন্যসব ছবিতে তা একইভাবে কুঁচকানো থাকতো না৷ আর অভিযানের ঠিক তিন মাস আগে নাসার ইঞ্জিনিয়ার ‘জ্যাক কিঞ্জলর’ পতাকার জন্য এই বিশেষ কাঠামোর ডিজাইন করেছিলেন।

এদিকে ‘রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের অধ্যাপক  ব্রায়ান কোবার্লিনর মতে, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়। যে কারণে ছবিতে এত উজ্জ্বলতা ছিল। আর এই উজ্জ্বল আলোর কারণেই পেছনে আকাশের তারা, ছবিতে ম্লান হয়ে গেছে। এছাড়া সেখানে ব্যবহৃত ক্যামেরায় এক্সপোজার ও শাটার স্পিড এমনভাবে সেট করা ছিল, যাতে চাঁদে মাটির কাছাকাছি নানা জিনিসের ছবি সহজেই তোলা যায়।

আরেকটি প্রচলিত যুক্তি ছিল, পৃথিবীকে ঘিরে যে ‘ভ্যান অ্যালেন বেল্ট’ নামের তেজস্ক্রিয়তা পরিমণ্ডল রয়েছে, তাতে নভোচারীদের মারা যাওয়ার কথা। কিন্ত তারা কীভাবে চাঁদে গেলেন?

আরও পড়ুনঃ আগামী ৩০ বছরে কতটা বদলে যাবে পৃথিবী

এই তেজস্ক্রিয়তা বলয়ের আবিষ্কারক ‘ভ্যান এলেন’ বলেছিলেন, Apollo-11 নভোযানটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল, যা ক্রুদের তেজস্ক্রিয়তা থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। এছাড়া ‘Apollo-11’ এর ক্রু যারা ছিলেন, চাঁদে যাওয়ার সময় তারা ‘ভ্যান এলেন বেল্টে’ ছিলেন মাত্র ২ ঘণ্টা। আর এই বেল্টের যে অঞ্চলে তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, সেখানে তারা অবস্থান করেছেন ৫ মিনিটেরও কম সময়। ফলে তাদের ওপর তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব একেবারেই পড়েনি।

তাছাড়া এ অভিযানকে ঘিরে আরেকটি প্রশ্ন উঠেছে, অর্ধশত বছর আগে মানুষ চাঁদে যদি গিয়েই থাকে, তাহলে এরপর আর যায়নি কেন?

আরও পড়ুনঃ রাজা চার্লসের যত অভিনব তথ্য /চার্লস যেখানেই যান, সঙ্গে থাকে টয়লেট সিট!

এ প্রসঙ্গে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত মোট ৬টি অভিযানে ১২ জন নভোচারী চাঁদে হেঁটেছেন৷ তারা চাঁদের যথেষ্ট নমুনাও সংগ্রহ করেছেন৷ পরবর্তীতে প্রযুক্তি আরও উন্নত হওয়ায় বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মনুষ্যবিহীন নভোযান চাঁদে পাঠিয়েই প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ পাঠানোর প্রয়োজন পড়েনি।

২০০৯ সাল থেকে চাঁদকে প্রদক্ষিণ করা একটি নভোযান চাঁদের বেশ কিছু ছবি তুলেছিল। ছবিতে দেখা গেছে, চাঁদের মাটিতে ‘Apollo-11’ নভোযান নামার স্পষ্ট ছাপ, দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ও সেখানে পড়ে থাকা ‘লুনার মডিউলের’ কিছু অংশ। আর এসব প্রমাণই বুঝিয়ে দেয় যে, চাঁদে সত্যিই মানুষ গিয়েছিল।

 

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!