বিনোদন

বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করলো ইরান

<![CDATA[

ইরানে হিজাব-বিরোধী বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে দেশটির সরকার। একই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহারেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। খবর আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, হিজাব ইস্যুতে গ্রেফতারের পর পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে এখনো দেশটির বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভ এবং অনলাইনে সরকারবিরোধী প্রচারণা অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে আটক করে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ। এরপর পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়।

গত ২০ সেপ্টেম্বর দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছে শতাধিক। প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ইন্টারনেট ওয়াচডগ নেটব্লকস জানিয়েছে, সমগ্র ইরানজুড়ে একই অবস্থা দেখা গেছে। কোনো মোবাইল ইন্টারনেট প্রোভাইডার এবং ব্রডব্যান্ড থেকেও এই দুটি অ্যাপে ঢোকা যাচ্ছিল না। প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে সরকার এবং এর কয়েক ঘণ্টা পর বন্ধ করা হয় ইনস্টাগ্রামও।

রাজধানী তেহরানের দুই বাসিন্দা জানান, তারা হোয়াটসঅ্যাপে শুধু টেক্সট পাঠাতে পারছেন কিন্তু কোনো ছবি পাঠানো যাচ্ছে না। অপরদিকে ইনস্টাগ্রামে প্রবেশই করা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: হিজাবকাণ্ডে উত্তাল ইরান, সংঘর্ষে নিহত ৫

ইরানের সংস্থা ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যা থেকেই ইরানে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করা যাচ্ছে না এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারেও সমস্যা হচ্ছে।

গত কয়েক বছর ধরেই ইরানে প্রায়ই বন্ধ থাকে ফেসবুক, টুইটার, টেলিগ্রাম, ইউটিউব এবং টিকটকের মতো সামাজিক মাধ্যম। ফলে এই দুই মাধ্যম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছিল।

চলমান বিক্ষোভে দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। অন্তত ১৫টি শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

প্রতিবাদ বিক্ষোভে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংস প্রতিক্রিয়ার কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলছে, তার মর্মান্তিক মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ এবং পরবর্তী সময়ে কী ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে তার সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত হতে হবে। মাহসার পরিবার যে অভিযোগ এনেছে সেটাও গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে।

আরও পড়ুন: হিজাব না পরায় পুলিশের ‘মারধর’, তরুণীর মৃত্যু

এর আগে ২০১৭ সালে কয়েক ডজন নারী জনসম্মুখে হিজাব খুলে প্রতিবাদ জানান। তখন কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এবারের আন্দোলনে অনলাইন ও সরাসরি দুই ধরণের অংশগ্রহণই চোখে পড়ার মতো। তাই রাস্তায় বিক্ষোভ মোকাবেলায় পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি অনলাইনেও ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করা হয়েছে।

১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লব হওয়ার পর থেকে নারীদের জন্য হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক। দেশটির নৈতিকতা পুলিশ এই ড্রেস কোড কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ড্রেস কোডের নিয়ম বাস্তবায়নে বিভিন্ন মানুষ বিশেষত তরুণীদের সঙ্গে নৈতিকতা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ঘিরে কড়া প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা অনেক সময় জোর করে নারীদেরকে পুলিশের গাড়িতে তোলে।

এদিকে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে কানাডা, জার্মানি ও তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ইরান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনেকে মাথার চুল কেটে প্রতিবাদ জানান।

 

 

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!