ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায়ের নেপথ্যে
<![CDATA[
ওবেদ ম্যাককয়ের হাফবলি ডেলিভারিটা কভারে ভাসিয়ে দিলেন আইরিশ উইকেটকিপার ব্যাটার লর্কান টাকার, স্কোর বোর্ডে যোগ হলো ৪ রান। তাতেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভেল স্বপ্নভঙ্গ ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেলদের খেলা দেখে যারা অভ্যস্ত, তাদের কাছে দৃশ্যটি সম্ভবত বেমানানই। এই ফরম্যাটের দুবারের চ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিল প্রথম রাউন্ড নামক ‘বাছাইপর্ব’ থেকে, তাও প্রথমবারের মতো। ক্যারিবীয়ানদের এই ব্যর্থতার পেছনের কারণ অবশ্য একটি নয়, বহুবিদই উল্লেখ করা যায়।
ঠিক কী কী কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই দানবীয় দলটার এমন ‘অধঃপতন’? চলুন সেসবে এক এক করে চোখ বোলানো যাক-
‘রাসেল’দের অভাব
টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা ধরা হয় আন্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারিনকে। জাতীয় দলেও কম সুনাম কুড়াননি তারা। কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো ও সুনীল নারিনরা ২০১২ সালে দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেন। ২০১৬ সালেও শিরোপাজয়ী দলে ছিলেন রাসেল, তবে শেষ দিকে নাম সরিয়ে নেন নারিন। আগের মতো এখনও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো মাতিয়ে থাকেন এই তারকারা। কিন্তু তারা এবার বিশ্বকাপ দলের অংশ হননি।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ থেকে দুবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায়
ব্যাটিংয়ে দৈন্যদশা
আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়ার পর ব্যাটারদের দোষ দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ ফিল সিমন্স। রান তোলায় কতটুকু বাজে পারফরম্যান্স ক্যারিবীয়দের? স্পিন বোলারদের বিপক্ষে এ বছর উইন্ডিজ ১০৫.৩৫ স্ট্রাইকরেটে রান তুলেছে। পেস বোলারদের বিপরীতে সংখ্যাটা ১৩৫.৭০। ২০২২ সালে তাদের ওভারপ্রতি রান তোলার হার ৭.৮৬ করে। এই বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে স্পিনারদের ১০৮ বলে তারা নিয়েছিল কেবল ৮৯ রান।
বড় তারকাদের ব্যর্থতা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান যে দলটা, সেখানে বড় তারকা বিবেচনা করা হয় এভিন লুইস, নিকোলাস পুরান ও রভমান পাওয়েলকে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে তাদের কদরও অনেক। লুইস টপ অর্ডারে খেললেও পুরান ও পাওয়েলকে ফিনিশারও বলে থাকেন কেউ কেউ। কিন্তু তিনজনই ব্যর্থ হয়েছেন বিশ্বকাপ মঞ্চে। তিন ম্যাচে লুইস ৪২, পুরান ২৪ ও পাওয়েল ৩৯ রান করেছেন।
আরও পড়ুন: দুশ্চিন্তায় পাকিস্তান, মাথায় বল লেগে হাসপাতালে ক্রিকেটার
হেটমায়ার ইস্যু
শিমরন হেটমায়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ দলে ছিলেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর মতো জাতীয় দলেও বিধ্বসী ব্যাটিং করেন এই তারকা। কিন্তু দুবার ফ্লাইট মিস করার কারণে তিনি দল থেকেই বাদ পড়ে যান। অবশ্য হেটমায়ার দলে থাকলে যে ‘হাতিঘোড়া’ করে ফেলতেন, তাও বলার অবকাশ নেই। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তার মতো পুরান-পাওয়েলরাও তো একইভাবে বিধ্বসী।
টিম স্পিরিট
বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলা বেড়ানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলটার খেলোয়াড়দের টিম স্পিরিটের অভাব রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। সময় সংবাদে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই কথার সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুলও। দুবারের চ্যাম্পিয়নদের আগেভাগে বিদায়ে কেউ কেউ দায়ী করছেন নিকোলাস পুরানের ক্যাপ্টেন্সিকেও।
]]>