Feni (ফেনী)অন্য জেলাফেনী

বারইয়ারহাট পৌর মেয়র খোকনকে দেখতে গেলেন সাংসদ নিজাম হাজারী

অনলাইন ডেস্ক->>

বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন কে দেখতে গেলেন ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। শুক্রবার বিকালে ঢাকা ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেজাউল করিম খোকন কে দেখে শারিরীক অবস্থার খোঁজ নেন এবং তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

এসময় ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ফেনী ও মীরসরাই এলাকার দুটি গ্রুপ দীর্ঘ দিন যাবৎ ফেনী নদীর বিভিন্ন স্পট ও কলমির নামক স্থান থেকে ভ্রাম্যমাণ ড্রেজার দিয়ে বালি তুলে অর্ধশতাধিক বোট দিয়ে বালি লুটে করে যাচ্ছেন। গত কয়েক দিন যাবৎ মিরসরাই উপজেলার বারইয়ার হাট পৌর মেয়র রেজাউল করিম খোকন ও ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন ও তাদের সমর্থকের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। গত ১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র খোকনের লোকজন বালি তুলতে গেলে রিপন চেয়ারম্যানের লোকজন দুটি বালিবাহী বোট আটকে রাখে। পরদিন শুক্রবার দুপুরে আরেকটি বোট যোগে মেয়র খোকন তার অনুসারীদের নিয়ে বোট দুটি ছাড়িয়ে আনতে গেলে আরেকটি বোটে থাকা রিপন চেয়ারম্যানের ১৫-২০ জন সশস্ত্র অনুসারী এলোপাথাড়ি গুলি করলে বারইয়ারহাট পৌর মেয়রসহ তার অনুসারী যুবলীগ নেতা অশোক সেন ও শহীদ খান দুখু গুলিবিদ্ধ হন। তারা চট্টগ্রামে মেডিকের কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে ওই ঘটনায় বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকন সহ ৩ জন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপনকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের বিরুদ্ধে গত ১৫ অক্টোবর সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছিলো মেয়র খোকনের ব্যবসায়ীক অংশিদার মো. মিজানুর রহমান। মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছিলো। ওই মামলায় পুলিশ শাকিল, নূর আলম, পলাশ ও মাসুদ উদ্দিন সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান।

মামলার এজহারে বাদি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার করের হাট ইউনিয়নের হাবিলদার বাসা এলাকায় পিজিসিপি’র নিয়ন্ত্রনাধীন একটি পাওয়ার ডিস্ট্রিবিশন সেন্টারে বালি ভরাটের কাজ চলছিলো। বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকন এর নির্দেশক্রমে মামলার বাদি জোরারগঞ্জ থানাধীন ওসমানপুর ইউনিয়নের আওয়তাধীন ফেনী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ডিস্ট্রিবিশন সেন্টারে বালি সরবরাহ করার কাজ করছে। মামলার প্রধান আসামীসহ অন্যন্য আসামীরা বাদির কাছে চাঁদা দবি করে আসছিলো এবং বিভিন্ন সময় হুমকি ও ধমকি দিয়ে আসছিলো। বাদি বিষয়টি বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকনকে জানালে মেয়র শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ইঞ্জিলচালিত নৌকা নিয়ে বালি উত্তোলনের কাজ পরিদর্শনে যায়। এসময় ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক রিপনের নির্দেশে আসামী মো. বেলার ওরফে কিলার বেলাল এর নেতৃত্বে ৮/১০ জন অ¯্রধারী সন্ত্রাসী ট্রলারযোগী এসে গুলি বর্ষন করে। এতে বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকন, অশোক সেন ও সাহেদ খান দুখু গুলিবিদ্ধ হয়।

অপরদিকে ওই মামলার পর ফেনী নদী ও কলমির চরে বালি তোলার দ্বন্দ্বে ঘটনায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকনকে প্রধান আসামি ও ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৫-২০জন সহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপনের মালিকীয় প্রত্যয় এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার ও ফাজিলপুর গ্রামের নুরুল আলম বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর করার জন্য সোনাগাজী মডেল থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন বলে জনিয়েছেন বাদির আইনজীবী কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগ।

মামলার আসামিরা হলেন, বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ও বারইয়ারহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন, যুবলীগ নেতা অশোক সেন, মিজানুর রহমান রিয়াদ, চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ বাঁশখালী ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের ফরহাদ, রাজু, সুজন, পশ্চিম হিঙ্গগুলি গ্রামের আবু নাঈম, হিঙ্গগুলি গ্রামের মোহাম্মদ শাহরিয়ার সোহেল, সোনাপাহাড় গ্রামের আবু সাঈদ, আশ্রাফুল ইসলাম, বাঁশখালী গ্রামের মেহেদী হাসান, করেরহাটের পশ্চিম জোয়ার গ্রামের মো. রাসেল, জোরারগঞ্জের ভালুকিয়া গ্রামের ফরহাদ হোসেন রাজু, দক্ষিণ অলি নগরের সাইফুল ইসলাম, পশ্চিম জোয়ারের সাইম নিজাম সাকিব, সাইফুজ্জামান মাসুদ, করের হাটের হাবিলদার বাসার শহীদুল জামান জুয়েল, ফেনীর ছাগলনাইয়ার নিজকুঞ্জরা গ্রামের জোবায়ের পারভেজ, মো. হারুন, ঘোপাল ইউনিয়নের সমিতি বাজার গ্রামের মো. পারভেজসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন।

মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, বাদীর লিজকৃত জায়গায় ১৪ অক্টোবর রেজাউল করিম খোকনের নেতৃত্বে তার সহযোগিরা এলোপাথাড়ি গুলি করে ৫টি বোটে তিন লক্ষাধিক টাকার বালি, ১৬টি ব্যাটারি, ২০ ড্রাম ডিজেল সহ ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার মালামাল লুট ও চারটি নোঙর করা জাহাজ ভাঙচুর করে ৭ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। এতে বাদী সহ কয়েকজন আহত হন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!