ভূতুড়ে নাকি গুপ্তধনের জাহাজ, কৌতূহলের শেষ নেই দ্বীপবাসীর
<![CDATA[
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়াদ্বীপে ভেসে আসে একটি ভলগেট জাহাজ। এই জাহাজ নিয়ে দ্বীপবাসীর কৌতূহলের যেন শেষ নেই। কেউ বলছে, ভূতুড়ে জাহাজ আবার কারো ধারণা এটি গুপ্তধনের জাহাজ। যা দেখার জন্য ছেঁড়াদ্বীপে যাচ্ছে কৌতূহলী মানুষ। তবে এটি মালামাল পরিবহনের একটি ভলগেট জাহাজ। এটির মালিক কারা তা বের করার জন্য অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ভয়াবহ রূপ নেয় সাগর। যার প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে জোয়ারের পানি ৫ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। এতে জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের একমাত্র জেটি। একই সঙ্গে ডুবে যায় ১৩টি ট্রলার। একই সঙ্গে ভেঙে যায় দ্বীপের অসংখ্য গাছ। আর রাতে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় পুরো দ্বীপ।
এরই মধ্যে সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে ছেঁড়াদ্বীপে হঠাৎ ভেসে আসে বিশাল আকৃতির জাহাজ। যা আটকে পড়ে প্রবাল পাথরে। জাহাজটি সোমবার ভেসে এলেও ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে কেউ জাহাজটির কাছে যেতে পারেনি।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজটির কাছে ছুটে যায় দ্বীপের কৌতূহলী মানুষ। আর রশি বেয়ে উঠে পুরো জাহাজটি দেখছেন তারা। অনেকেই বলছেন, ভূতুড়ে জাহাজ। আবার অনেকেরই ধারণা, গুপ্তধনের জাহাজ। বিশেষ করে, জাহাজটি ঘিরে দ্বীপের শিশুরা বেশ আনন্দে মেতেছে।
আরও পড়ুন: ছেঁড়াদ্বীপে ভেসে এলো বিশাল আকৃতির জাহাজ
দ্বীপের বাসিন্দা সিরাজ বলেন, ‘ভেসে আসা জাহাজটির ভেতরে প্রবেশ করি। ভেতরে কংকর দেখা গেছে। আর উপরের অংশ পুরোটা ফুটবল খেলার মাঠের মতো।’
আরেক বাসিন্দা রহিম বলেন, ‘ছেঁড়াদ্বীপে এসে দেখলাম টাইটানিকের মতো বিশাল একটি জাহাজ ভেসে উঠছে। সবাই দেখতে আসছে, তাই আমিও দেখতে এলাম। জাহাজটি বেশ লম্বা ও অনেক বড়।’
ইয়াছিন নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এত বড় জাহাজ পাথরে যেভাবে আটকে পড়েছে তা দেখে হতবাক হয়ে গেলাম। তবে এই জাহাজটি আবার সাগরে নামানো যাবে কি না সন্দেহ।’
দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, জাহাজটি বর্তমানে পাথরের সঙ্গে আটকে পড়েছে। জাহাজটির সামনে এবং পেছনে সিঙ্গাপুর, এম.আর ৩৩২২ লেখা আছে। এতে বোঝা যায়, জাহাজটি অবশ্যই সিঙ্গাপুরের। তবে এখানে আসার বিষয়টি বুঝতে পারছি না।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: উত্তাল ঢেউয়ে তছনছ কক্সবাজার সৈকত
এদিকে জাহাজটিতে কোনো লোকজন ছিল না। তবে ভেতরে পাওয়া যায় সামান্য পাথর আর কংকর। আর জাহাজের গায়ে লেখা ছিল সিঙ্গাপুর, এম.আর ৩৩২২। এই জাহাজটির কর্তৃপক্ষ কারা তা বের করার জন্য অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, ছেঁড়াদ্বীপে আটকে পড়া জাহাজটি আসলে জাহাজ মনে হয়নি। এটা সাধারণত মালামাল পরিবহনের জন্য জাহাজে ব্যবহৃত অংশ। যাকে ভলগেট বা বার্জ বলা হয়। তবে এটি কাদের তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এটি নিশ্চিত হতে সরকারি সংস্থাগুলো কাজ করছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়াদ্বীপে ভেসে আসা সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী জাহাজটি বাংলাদেশে পাথর নিয়ে এসেছিল। খালাস শেষে মালয়েশিয়া ফেরার পথে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে জাহাজটি।
]]>